
রিপন মিয়া, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা): গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের শান্তির মোড় নামক এলাকা থেকে একটি হিমালয়ান গৃধিনী (Himalayan Griffon) প্রজাতির শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় বিশাল আকৃতির শকুনটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করে।
স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে শকুনটি হঠাৎ উপজেলার হরিপুর দুর্গা মন্দিরের পাশে আকাশ থেকে পড়ে। আহত শকুনটিকে রেজ্জাক আলী ও স্থানীয় কিছু লোকজন উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আবার আকাশে উড়িয়ে দেন। কিন্তু শকুনটি এক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ারপাতার এলাকায় গিয়ে আবারও একটি গাছে আটকা পড়ে। পরে শকুনটি উদ্ধার করে আবারও শান্তিরমোড় এলাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর ৯৯৯ নম্বরে ফোন ও উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করেন স্থানীয়রা।
পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা শকুনটি উদ্ধার করে গাইবান্ধা বন বিভাগের হেফজতে দেন।
শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি জিসান মাহমুদ বলেন, হিমালয়ান শকুন হচ্ছে প্রকৃতির ঝাড়ুদার। শকুন বড় ডানার বৃহদাকার পাখি। এটি তীক্ষ্ণ দৃষ্টির অধিকারী ও মৃত প্রাণী ভক্ষণকারী পাখি। শকুনই একমাত্র প্রাণী, যারা রোগাক্রান্ত মৃত প্রাণী খেয়ে হজম করতে পারে এবং অ্যানথ্রাক্স, যক্ষ্মা, খুরারোগের সংক্রমণ থেকে জীবকুলকে রক্ষা করে। তিনি আরও বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘তীর’ শকুনসহ সব বন্য প্রাণী সংরক্ষণে ২০১১ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে।
ঘটনাস্থলে আসা শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, একপ্রাপ্ত থেকে আরেক প্রান্তে দীর্ঘ পরিযানের পথ। এর ফলেই অনেক শকুন অসুস্থ হয়ে হারায় উড়ার শক্তি। হিমালয়ী গৃধিনী শকুনটি অসুস্থ। শকুনটির উচ্চতা প্রায় তিন ফুট, পাখার দৈর্ঘ্য ৭ ফুট ও ওজন ১০ কেজি। শকুনটি গাইবান্ধা বন বিভাগের অফিসে রাখা হবে।
এ ব্যপারে সোমবার গাইবান্ধা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএইচএম শরিফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, রোববার রাতে শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সংগঠন তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা একটি শকুন বনবিভাগের অফিসে নিয়ে আসেন। শকুনটি অসুস্থ। আজ দিনাজপুরের সিংড়া শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে হস্তান্তর করা হবে।