নাঈম হোসেন, রাজশাহী : রাজশাহী মহানগরীর ডোমপাড়া এলাকায় প্রায় ২ বিঘা আয়তনের একটি পুকুর অভিনব কায়দায় ভরাট করছে প্রভাবশালীরা। পুকুরটি ৬নং ওয়ার্ড দাশপুকুর ডোমপাড়ায় অবস্থিত।
জানা যায়, দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে পুকুরে মাছ চাষ থেকে শুরু করে ডোমপাড়া বাসিন্দারা এখনো অনেকেই এই পুকুরের পানিতে গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ করে থাকেন। বাপ-দাদার আমল থেকেই মাছ চাষ এবং এই পুকুরটির পানি নানা কাজে ব্যবহার করে আসছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করে কয়েকদিন যাবৎ এলাকাবাসী লক্ষ্য করেন পুকুরের পাড় ঘেঁষে ময়লা, ইটের রাবিশ ফেলে প্রায় এক তৃতীয়াংশ পুকুর ভরাট করে ফেলেছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এই পুকুর দেখে আসছি। এখন পুকুরের মধ্যে দেখি ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকুর লোকেরা ভ্যানে করে ময়লা ফেলে পুকুর ভরাট করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই পুকুরটা আমাদের বাড়ির সামনে হওয়ায় আমরা সবাই গোসল করি, অনেক সময় পূজাও করি। আর অল্প-অল্প করে ময়লা-আর্বজনা ফেলে এই পুরাতন পুকুরটা ভটার করছে কাউন্সিলরের লোকজনরা। আমরা তো ভয়ে কিছু বলতে পারিনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, টিবি পুকুরের পাশে এরকম ভাবে পুকুর ভটার করেছে কাউন্সিলরের লোকজন আপনারা কোথায় ছিলেন এতদিন।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকুর ভ্যানম্যান ভ্যানে করে ময়লা, রাবিস ফেলছেন। জানতে চাইলে সেই ভ্যানম্যান বলেন সব লোকজন ময়লা ফেলে তাই আমিও ফেলি। এভাবেই ময়লা,ইটা- রাবিস ফেলে অভিনব পদ্ধতিতে ধীরে ধীরে ভরাট করা হচ্ছে নগরীর আইডির ডোমপাড়ার পুকুর। ওইসব পুকুরগুলো ভরাট করে রাতারাতি সেখানে গড়ে উঠছে ভবন। অথচ উচ্চ আদালতের কড়া নির্দেশনা রয়েছে রাজশাহী নগরীতে কোনোভাবেই পুকুর-জলাশয় ভরাট করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক পুকুর ভরাট চলছেই নগরীতে।এসব নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে।
জানতে চাইলে পুকুর মালিক রোমান বলেন, পুকুর ভরাট করে আমরা দোকানঘর নির্মাণ করবো আর এ বিষয়ে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু ভাইকে জানিয়ে আমরা কাজ করছি। ভূমি সহকারী কমিশনার জানান, এ বিষয়টা আমার অবগত ছিলো না আমরা তদন্ত করে বিষয়টা দেখবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজপাড়া থানার (ওসি) বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি এ বিষয়ে পরে কথা বলছি।
সম্প্রতি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছিলেন, রাজশাহীতে পুকুর ভরাট যেন কোনোভাবেই না হয়। সেই দিকে রাসিক কাউন্সিলরা খেয়াল রাখবেন। এটি উচ্চ আদালতের কড়া নির্দেশনা রয়েছে। যদি কোন অসাধু ব্যক্তি পুকুর ভরাট করে তার বিরুদ্ধে আইন-অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু বলেন, ‘আমি জানি না পুকুর ভরাটের বিষয়ে। আর সব বিষয় জানতে হবে কাউন্সিলরকে?’ কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘ওই পুকুরে লোকজন ময়লা-আর্বজনা ফেলে। আমার দরকার তাই আমিও ফেলছি। আর এটাতো সিটি কর্পোরেশনের লিস্ট করা পুকুর না ।’ তিনি ভরাট হওয়া অনেক পুকুর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘এগুলো তো বন্ধ করতে পারেননি। আমার কাছে জানতে চাওয়ার অধিকার আপনার নেই আপনি ভুল প্রশ্ন করেছেন। আপনার গোটা টিম নিয়ে আমার চেম্বারে আসেন।’ এ সময় কাউন্সিলর রাগান্বিত হয়ে বলেন, ‘সময় নেই।’ বলে ফোন কেটে দেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা