রকিবুজ্জামান, মাদারীপুর: মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পালরদী নদীর পুরান বাজার হতে উপজেলার পিছন দিয়ে বয়ে যায় কুমারাড়ী খাল। এই খাল দখল করে দুইপাড়ে গড়ে উঠেছে সারি সারি দোকান। খালের উপরেও তৈরি করা হয়েছে কাঁচা-পাকা সাঁকো আর ঘরবাড়ি। এখনও যে যেভাবে পারছে দখল করে চলেছে এই খাল।
আর খালের দখল করা অংশে তৈরি করা দোকান আর বাসাবাড়ি থেকে খালে প্রতিনিয়তই ফেলা হচ্ছে ময়লা-আর্বজনাসহ নানা বর্জ্য। এর ফলে স্বাভাবিক পানি চলাচল বন্ধ হয়ে কালচে রঙের পানি হতে ছড়াছে দুর্গন্ধ।
দখলের পর খালের যেটুকুমাত্র অবশিষ্ট রয়েছে, সেটুকুও এখন যেন ময়লার ভাগাড়।
কালকিনি উপজেলা পরিষদের পিছন দিয়ে বয়ে চলা খালের এই চিত্রই বলে দেয় কতটা লাগামহীনভাবে চলছে দখলের মহোৎসব।
সরকারি জায়গা দখল করে অবাধে চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য। শুধু ব্যবসাই নয়, প্রতিনিয়ত খালে ময়লা ফেলে পুরোটাই ভরাট করার মরিয়া পাঁয়তারা চালাচ্ছে স্থানীয় দখলদাররা।
পালরদী নদী থেকে আসা এই খালটির একটি অংশ চলে গিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশ দিয়ে।পুরোটা খাল এখন ময়লা আবর্জনায় ভরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,খালের দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকান ও বসতবাড়ি।কোথাও আবার বসছে মাছ ও সবজির বাজার। আর এসবের ময়লা ফেলা হচ্ছে খালের ভিতরে। এতে পুরো খালটি ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে।খালের জমা কালচে পানিতে জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা। এছাড়া ময়লার দুর্গন্ধে খালের পাশ দিয়ে সাধারন জনগণের চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া হাসপাতালের পাশ দিয়ে খালের জমা পঁচা পানিতে বিভিন্ন রোগবাহী মশা জন্ম নেয়ায় হাসপাতালের রোগীসহ এলাকাবাসী ডেঙ্গুর আতংকে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময় এই খাল দিয়ে ইঞ্জিনচালিত বড় বড় নৌকা চলতো।ধীরে ধীরে দখল ও খালে ময়লা আবর্জনা ফেলায় এখন বর্ষা মৌসুমেও খালে পানির দেখা মিলছে না। খালের পাড়, খালের ভেতরের সবটাই মানুষ বর্জ্য-আবর্জনা ফেলে ফেলে দূষিত করে ফেলেছে।তাই খালের পঁচা পানি থেকে এখন দুর্গন্ধ আসে।
স্থানীয়রা আরো জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করা হবে এমন খবর বহুবার শুনেছি।তবে এখনও কারো কোন কার্যকরী ভূমিকা দেখছি না।অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালটি পরিস্কার করা হলে ভালোই হবে। খালটি আবার নতুন জীবন ফিরে পাবে। আমরাও দুর্গন্ধ থেকে বাঁচবো।
বিগত দিনে উপজেলা প্রশাসন সহ অনেকেই খালটি পুনরুদ্ধার করে স্বাভাবিক পানি চলাচল নিশ্চিত করার বিষয়ে আশ্বাস দেন।তবে সেটা এখনও আশ্বাসের ভিতরেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, ইতিমধ্যে খালগুলো উদ্ধারে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। আমরা সম্মিলিতভাবে দ্রুত খালগুলো পরিস্কার ও পুনরুদ্ধার করে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা নেব।
কালকিনি পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা) তানিয়া ফেরদৌস বলেন,ইতিমধ্যে পৌরসভার ভিতরের খাল উদ্ধারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।অচিরেই খালের অবৈধ স্থাপনা ও আবর্জনা অপসারণ করে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করা হবে।পাশাপাশি পরবর্তীতে যাতে স্থানীয় বাসিন্দারা খালে ময়লা আবর্জনা না ফেলে সে ব্যাপারেও তাদেরকে পৌরসভা ও প্রশাসনের পক্ষ হতে সচেতন করা হবে।
পালরদী নদী হতে খালের মুখে পানি প্রবেশের বাঁধ সরিয়ে খালের পানি চলাচল স্বাভাবিক করে দ্রুত এই খালটির প্রাণ ফিরিয়ে আনার দাবী এলাকাবাসীর।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা