

জিয়াউল হক (খোকন), নিজেস্ব প্রতিবেদক: কুষ্টিয়ায় এবারো কাঠ পুড়িয়ে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করতে এর মালিকদের সংগঠন ৬ কোটি টাকা চাঁদা তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে সমিতির নামে অবৈধ ভাটা মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হয়েছে। আর এই টাকা দিয়ে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে এই মৌসুমে ইট পোড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে,কোনো চেষ্টায় কাজে আসবে না। সব গুলো অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালাবেন তাঁরা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসেবে- কুষ্টিয়া জেলায় ১শ ৬১টি ইটভাটা আছে। এরমধ্যে পরিবেশের ছাড়পত্র আছে মাত্র ১৮টির। বাকি সব ইটভাটা চলছে অবৈধ উপায়ে। এসব ভাটায় দেদারসে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি। এ কারণে বৃক্ষ উজাড় হচ্ছে, হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। ক্ষতি হচ্ছে কৃষিরও। এদিকে চাঁদা তোলার বিষয়টি ইটভাটা মালিকরা স্বীকার করলেও অস্বীকার করেছেন ইটভাটা মালিকদের নেতারা।
গত মাসের সোমবার (০৯ জানুয়ারী) জেলার দৌলতপুর উপজেলার ৬টি অবৈধ ইটভাটাকে ২৪ লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ উপজেলায় ৬টি ইটভাটায় অভিযান চালালেও জেলার বাকি ইটভাটা গুলো দেদারসে চলছে।
নাম-প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইটভাটা মালিক বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে ইটভাটা মালিক সমিতির নেতারা ভাটা প্রতি ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা তুলেছেন। ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েও বাকি টাকার জন্য ইটভাটা মালিক সমিতির নেতারা চাপ দিচ্ছেন। টাকা দিতে রাজি না হলে ভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনকে দিয়ে জরিমানা করার হুমকি দিচ্ছেন সমিতির নেতারা।
কুষ্টিয়ার একাংশ ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ইটভাটা মালিকেরা একজন ফকিরকে ভিক্ষা দেয় না। আর ইটভাটা সমিতিকে চাঁদা দিয়েছেন এটা সত্যি হাসর্কর। যারা এমনটি বলেছেন এটা তাদের মন গড়া কথা।
কুষ্টিয়া পরিবেশ ক্লাবের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে হাইকোর্টের
নির্দেশনা রয়েছে। আইনের তোয়াক্কা না করে ইটভাটাগুলোতে অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে এসব কাঠ সংগ্রহ করায় হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের তেমন তৎপরতাও নেই। বার বার পরিবেশ ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হলেও নামমাত্র দুই একটি ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। যে ভাটা মালিক চাঁদা দেয় না তাদের উপরেই এ অভিযানটা হয়। অথাৎ বোঝা যাচ্ছে চাঁদার সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তর জড়িত রয়েছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশবাদী খলিলুর রহমান মজু বলেন, সংশ্লিষ্টদের লুকোচুরি খেলাতে জণগণকে রক্ষা করা উচিৎ। নিয়মতান্ত্রিক যেটা সেই ব্যবস্থা করা উচিৎ।
পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক হাবিবুল বাসার বলেন, কোনো চেষ্টায় তাদের কাজে আসবে না। আর টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার কথা যদি কেউ বলে থাকে এটা অসত্য। আমরা বসে নেই, ধারাবাহিক অভিযান চলছে। জেলায় এখন পর্যন্ত ৭টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়েছে। আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ইটভাটা মালিকদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা