মোঃ হাসান ভূঁইয়া, মাধবপুর (হবিগঞ্জ): সিলেটে পাথর কাণ্ডের পর এবার শুরু হয়েছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের সেগুন গাছ নিধন। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে চলছে সেগুন গাছ কাটার মহোৎসব।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পর্যটক প্রেমিকের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তবে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে সেগুন গাছ চুরির ঘটনা নতুন নয়। দেশের ৫০টিরও বেশি পত্রিকায় বিভিন্ন সময় লাখ লাখ টাকা মূল্যের সেগুন গাছ চুরির দৃশ্য উন্মোচিত হয়েছে। তবুও টনক নড়েনি কুচক্রী মহলের। এ যেন সরিষার মধ্যেই ভূত বিরাজমান।
শনিবার (৩০ আগস্ট) হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের হামলায় আহত হয়েছেন দুই স্থানীয় সাংবাদিক। প্রায় ২০ লাখ টাকা মূল্যের সেগুন গাছ চুরির আলামতের ভিডিও ধারণ করতে গেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে বন কর্মকর্তারা।
আহত সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি মুজাহিদ মসি ও বাংলা টাইমস পত্রিকার প্রতিনিধি ত্রিপুরারি দেবনাথ। হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে উদ্যানের বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ এবং জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট নূর মোহাম্মদসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
আহত সাংবাদিকদের অভিযোগ, এক মাস আগে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও তেলমাছড়া এলাকায় প্রায় ৬০০ ফুট সেগুন গাছ কেটে পাচার করেন অভিযুক্ত বন কর্মকর্তারা। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১৮-২০ লাখ টাকা। এই পাচারের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বন কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তাদেরই একজন বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে ফাঁস করেন।
খবর পেয়ে তারা ঘটনার আলামত ও ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে অভিযুক্ত বন কর্মকর্তারা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তাদের ক্যামেরা ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। বন কর্মকর্তারা এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দেন।
সাংবাদিক মুজাহিদ মসি ও ত্রিপুরারি দেবনাথ জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে বনের গাছ পাচার নিয়ে প্রতিবেদন করছেন। এ কারণে বন কর্মকর্তাদের তাদের ওপর ক্ষোভ ছিল। শনিবার হামলার পর বন কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলাও করেছেন, যা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা।
সিলেটের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আবুল কালাম বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা খুবই দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি তাকে জানানো হয়নি বলেও জানান তিনি।
এই ঘটনার পর হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড.ফরিদুর রহমান সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে বন পরিদর্শনকালে রিজার্ভ ফরেস্টের অভ্যন্তরে সেগুন গাছ কাটা এবং চুরি হওয়ার আলামত পান। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা