যায়যায় কাল ডেস্ক: ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর রোববার সকাল থেকে ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকছে অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায়। ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন ৫৫২টি খাদ্য ও জরুরি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘রোববার দিনভর রাফা ও অন্যান্য সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে মোট ৫৫২টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। ট্রাকগুলোতে গাজার বাসিন্দাদের জন্য জ্বালানি, ময়দা, চিকিৎসা সামগ্রী, শাকসবজি, মাংস ও অন্যান্য জরুরি ত্রাণ পাঠিয়েছে। এই ট্রাকগুলোর মধ্যে ২৪২টিকে উত্তর গাজায় পাঠানো হয়েছে।’
জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থা জানিয়েছে, তাদের ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো উত্তর দিকে জিকিম এবং দক্ষিণ দিকে কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে। কিছু ত্রাণবাহী ট্রাককে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেল আত্তি এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুয়ায়ী প্রতিদিন গাজায় ৬০০ ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের ব্যবস্থা করা হবে, যার মধ্যে ৫০টি ট্রাকে থাকবে জ্বালানি।
গাজায় প্রায় ১৫ মাস ধরে সামরিক আগ্রাসনকালে ঠিকমতো ত্রাণ প্রবেশ করতে দেয়নি ইসরায়েল। ফলে ভয়াবহ খাদ্য সংকট এমনকি কোথাও কোথাও দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে অধিবাসীরা।
গত সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর থেকে উপত্যকার সীমান্তে হাজার হাজার ট্রাক ত্রাণবাহী ট্রাক ভেতরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজায় বিতরণের জন্য তাদের ১ হাজার ৩০০ ট্রাক ত্রাণ প্রস্তুত রয়েছে।
গাজার আল-মাওয়াসি শরণার্থী শিবির থেকে সংস্থাটির মুখপাত্র রোজালিয়া বোলেন শনিবার (১৮ জানুয়ারি) জানান, আমাদের ১ হাজার ৩০০ ট্রাক পণ্য আনার ব্যবস্থা আছে। এরপর আরও ৭০০ ট্রাক পণ্য অল্প সময়েই নিয়ে আসা যাবে। তিনি আরও বলেন, এসব কেবল আমরা একা ব্যবস্থা করিনি। বরং এক্ষেত্রে অন্যান্য মানবিক কর্মীরাও আমাদের সরবরাহ করেছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) রোববার জানিয়েছে, গাজায় প্রবেশের জন্য তাদের ৪ হাজার ট্রাক মানবিক সাহায্য প্রস্তুত রয়েছে, যার অর্ধেক চালানে রয়েছে প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ ও আটা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে নজিরবিহীন এক হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। হামলায় নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন। এর পাশাপাশি ২৫০ জনকে গ্রেফতার করে গাজায় নিয়ে যায় হামাসের যোদ্ধারা।
সেই হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ১৫ মাসের সেই ভয়াবহ অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৭ হাজার বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ জন। এছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১১ হাজার মানুষ।
যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাতার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে গাজায়। রোববার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে এই বিরতি শুরু হয়েছে। বিরতির প্রথম দিন তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলে ৯০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা