লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে শ্বশুরের জমির সমাধান করতে গিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যবসায়ী রুহুল আমিন দেওয়ান ও তার পরিবার। মামলা হামলার ভয়ে এখন তারা বাড়ি ছাড়া। ঘটনাটি রায়পুর উপজেলার ২নং চর বংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামে।
জানা যায়, চর বংশী দেওয়ান বাড়ির মৃত রহিম দেওয়ানের ছেলে। লোকমান দেওয়ানের সাথে একই এলাকার সৈয়দ আহমেদ দেওয়ানের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। এ বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ নেন লোকমান দেওয়ানের মেয়ের জামাই রুহুল আমিন দেওয়ান। স্থানীয়ভাবে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে এ নিয়ে। কিন্তু সৈয়দ আহমেদ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানেননি। গত ২৭ এপ্রিল সালিশি বৈঠক শেষে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ পর্যায়ে তা মারামারিতে রুপ নেয়। এতে সৈয়দ আহমেদের ছেলে সায়েম মাথায় আঘাত পায় এবং রুহুল আমিন হাতে আঘাত পান। পরে স্থানীয়রা তা সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে স্থানীয়দের অমান্য করেন সৈয়দ আহমেদ। গত ১৮ জুন বিকালে বহিরাগতদের নিয়ে রুহুল আমিন দেওয়ানের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য আবারও আশ্বাস্ত করেন। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সৈয়দ আহমেদ স্থানীয় সালিশ না মেনে রুহুল আমিন ও তার ছেলেকে আসামি করে থানায় ও কোর্টে মামলা দায়ের করেন। এতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রুহুল আমিন ও তার ছেলে।
রুহুল আমিন দেওয়ানের শশুর লোকমান দেওয়ান অভিযোগ করে বলেন, সৈয়দ আহমেদ দেওয়ান জালিয়াতি করে আমার জমি নিয়ে যায়। অথচ ভোগ দখল থেকে শুরু করে সব কিছু আমার। এ বিষয়ে কয়েকবার সমাধানের জন্য বৈঠক হলেও সে মানে নি। এখন আমার মেয়ের জামাই ও নাতিকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
রুহুল আমিন বলেন, আমার শশুরের জমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসার চেষ্টা করায় আজ আমি মামলার আসাসি। এছাড়া আমার উপর হামলাও চালিয়েছে তারা। এখন মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে। আমার দুই ছেলে তারা ছাত্র। মামলায় তাদেরও জড়িয়েছে। এখন তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি এর সঠিক সমাধান চাই।
এ বিষয়ে জানতে সৈয়দ আহমেদ দেওয়ানের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি সমাধান হবে। এ বলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রোকন দেওয়ান বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয় পক্ষই রাজি ছিলো। কিন্তু এখন আবার সৈয়দ আহমেদ দেওয়ান কেন মামলা করেছে তা আমাদের জানা নেই। তারপরও যদি তারা সমাধানের জন্য আসে তাহলে আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো।
হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সালাহ উদ্দিন বলেন, ঈদের পরের দিন ৯৯৯ এ কল পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সেখানে ঘর ভাঙচুর ও কোপানোর ঘটনা ঘটেছে। একজন মহিলাও আহত হয়েছে। পরে তাদের থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগের আলোকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।