বৃহস্পতিবার, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দিনাজপুরে মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ

খাঁন মো. আ. মজিদ, দিনাজপুর: ৪ আগস্টের আন্দোলনকে পুঁজি করে একটি চক্র দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থানায় দোকানপাট অগ্নি সংযোগে ভষ্মীভূত হওয়া দোকানপাট থেকে মালামাল লুটসহ দোকানপাট ভাঙচুর দেখিয়ে গত ১৬ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন যার নম্বর ১১।

মামলার বাদী মো. দুলাল আসাদুজ্জামান চৌধুরী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন যে, ৪ আগস্ট স্থানীয় তৃণমূল সংগঠন ও অঙ্গ সংগঠন আওয়ামী লীগ বিরোধী জনগণের সহযোগিতায় “হটাও হাসিনা” সমাবেশের আয়োজন করে। দিনাজপুর টু পার্বতীপুর আন্তঃজেলা হাইওয়ে রোডে পাশে গার্মেন্টস বাজারে সিকেচুয়েটার এর সংলগ্ন বাজারে সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে চলাকালীন সময়ে সমাবেশে বোমা ফাটানো হয়, ককটেল নিক্ষেপ করে সমাবেশ স্থল তছনছ করে প্রায় ৩ থেকে ৪টি চায়ের দোকান, মুদির দোকান সহ অন্যান্য দোকান গুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ভূষ্মিভুত করা হয় এবং অন্যান্য দোকান ভাঙচুর করে কোটি টাকার মালামাল লুটপাট দেখিয়ে ১৮৩ জন আসামি করে একটি মিথ্যা মামলায় ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। সেই ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১ থেকে ১১ জন সাক্ষীর চায়ের দোকান, মুদির দোকানসহ বিভিন্ন দোকান ছিলো সেই দোকানগুলো অগ্নিসংযোগ ও লুট এর কথা উল্লেখ করে। অথচ ১নং সাক্ষী হতে ১৪ নং সাক্ষীর মধ্যে কারো সেই স্থানে কোন প্রকার দোকান নেই।

পরবর্তীতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উক্ত এলাকায় কোন প্রকার দোকানপাট ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ দোকান লুট এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।

সরেজমিনে খোঁজ নিতে গেলে স্থানীয় দোকানদারদের সাথে কথা বললে দোকানদারদের মধ্যে চিরিরবন্দর উপজেলার মর্ত মন্ডল গ্রামের বাসিন্দা মো. মোসলেম এর ছেলে মো. শরিফুল, ইসলাম ভোলানাথপুর গ্রামের বাসিন্দা উজির আলীর ছেলে আফজাল হোসেন, একই গ্রামের আব্দুল কাদের এর ছেলে রুবেল, মৃত আলেব আলী এর ছেলে আরিফুল, বড়গ্রাম এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে রেজাউল ইসলাম বাবু, একই গ্রামের মৃত লালু মোহাম্মদ শাহ এর পুত্র সাইদুর রহমান ছেলে এবং ইন্দ্র পাড়া গ্রামের মৃত ভূঁইয়া শাহ এর ছেলে নমসের মাস্টার বলেন, গত ১৬ নভেম্বর তারিখে ১১নং মামলায় যেই সাক্ষী গনের নাম ব্যবহার করা হয়েছে সেই সাক্ষী গনের এখানে কোনো দোকানপাট নাই এবং অত্র এলাকায় কোন দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ এবং দোকানপাট ভাঙচুর ও মালামাল লুট করা হয়নি। এ সকল বিষয় দেখিয়ে যে মামলাটি করেছে আমরা নিজেও জানি না। এ ধরনের ঘটনা অত্র এলাকায় ঘটেনি বলে উপরোক্ত দোকানদার ও ব্যবসায়ী ব্যক্তিগণ বলেন।

মামলায় ১নং সাক্ষী যাকে ব্যবহার করা হয়েছে তিনি চিরিরবন্দর উপজেলার বড়গ্রাম এলাকার মৃত আলহাজ্ব তজিমুদ্দিন সরকার এর ছেলে শাহজাহান সিরাজ। শাহজাহান সিরাজ বলেন, এই মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট এই ধরনের মামলা করে স্থানীয় কিছু ব্যক্তিদের কাছে সুবিধা ভোগ করার জন্য একটি গ্রুপ প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, মামলায় আমাকে ১নং সাক্ষী ব্যবহার করা হয়েছে এবং মামলায় এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে ঘটনাস্থ আমার চায়ের দোকান আছে, অথচ আমার অত্র এলাকায় কোন চায়ের দোকান তো দূরের কথা, কোন প্রকার দোকান সাথে আমি জড়িত নই এবং আমার নামে কোন দোকান নাই। এই এলাকার অন্যান্য ব্যবসায়ী ও দোকানদারগণ সবাই ভালোভাবেই জানে আমি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। অন্যান্য সাক্ষীগনেরও কোন দোকান নেই, যা স্থানীয় অন্যান্য দোকানদারগণ অবগত আছেন।

মামলা সম্পর্কে ১নং সাক্ষী শাহজাহান সিরাজ আবারও বলেন, এই ধরনের মামলা মূলত উদ্দেশ্যে প্রণিত ভাবে করা হচ্ছে। যে ব্যক্তি উদ্দেশ্য প্রণীতভাবে এই মামলাটি করেছেন তিনি আমাদেরকে না জানিয়ে আমাদের নাম ব্যবহার করে সাক্ষী বানিয়ে দলীয়ভাবে আমাকে এবং আমার অন্যান্য সহযোগীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। শাহজাহান সিরাজ বলেন, আমার বাবা মরহুম তমিজ উদ্দিন সরকার তার জীবদ্দশায় ৭নং আউলিয়া পুকুর ইউনিয়নের সৎ ও নিষ্ঠার সাথে ২২ বছর যাবত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৯৪৯ সাল হতে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। সেই পরিবারের ভাবমূর্তি নষ্ট এবং আমার রাজনৈতিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ও সংঘাত তৈরি করার উদ্দেশ্যে যারা এই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তারা বিগত সরকারের আমলে প্রায় ১৭ বছর সুযোগ সুবিধা গ্রহণকারী ও স্বার্থন্বেষী ব্যক্তিদের সাথে মিলেমিশে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে চলেছে। আর আমরা হয়েছি নির্যাতিত। স্থানীয় জনসচেতন ব্যক্তিরা এর প্রতিকার চায়।

জামাইকে ব্যক্তির সহযোগিতায় একটি মহল। আমি চাই যারা এই ধরনের কার্যক্রম করছেন এবং তাদের সহযোগিতা করছেন তাদের এই ধরনের কার্যক্রম উদঘাটন করে জনসম্মুখে উপস্থাপন করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। অন্যথায় এই ধরনের কার্যক্রম করার জন্য তাদের সহযোগিতা করলে অন্যান্যরাও প্রতিহিংসায় লিপ্ত হবে এবং বড় বড় অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজন ও বিরাজ এবং সংঘর্ষের পর্যায়ে এগিয়ে যেতে পারে। এগুলোর সুযোগ ব্যবহার করবে সুযোগ-সন্ধানী ও সুবিধাবাদী ব্যক্তিরা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ