রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর উপজেলায় শত শত বিঘা আবাদি জমিতে গভীর রাতে চলছে পুকুর খনন। ২০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি নিয়ে অলিখিত অনুমোদন দেয় উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার ও শনিবার সারাদিন দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৫/২০ টি পুকুর খনন ও সংস্কারের নামে চলছে মাটি বিক্রি ও রাস্তা নষ্টের মহোৎসব।
উপজেলার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পুকুর খননকারীদের ‘মাটি উৎসবে’ চরমভাবে বিপাকে সাধারণ মানুষ। সাধারণ কৃষক নানাভাবে হয়রানিসহ প্রভাবশালীদের হুমকি-ধমকিতে জমি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। রাস্তাগুলো সাধারণ জনগণের চলাচলের অযোগ্য করে তোলা হয়েছে। কৃষকদের আবাদি জমি এখন হুমকির মুখে। পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সমাধান পাচ্ছেন না প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
জানা গেছে,উপজেলার ঝিনার মোড়, জয়নগর, নামদার, খালি আঙরবিল, শ্যামপুর বউবাজার, নিগার হিমাগারের পিছন, কানপাড়া পাইকরতলা, কিসমত তেকাটিয়া তেবিলা, গোপালপাড়া বিল, রাতুগ্রাম বিল, উজান খোলসি, আনুলিয়া, বহরমপুরসহ আরো কয়েক জায়গায় চলছে পুকুর খননের মহোৎসব। রাস্তার বারোটা বাজিয়ে দেদারসে শত শত বিঘা আবাদি জমিতে পুকুর খনন চলছে।
উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় পুকুর খনন চললেও কোনো প্রকার তৎপরতা চালাতে দেখা যায়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
প্রতিটি পুকুর খননকারীদের বক্তব্য প্রশাসনের অলিখিত অনুমোদন নিয়েই চলছে পুকুর খনন। কেউ এই পুকুর খনন বন্ধ করতে পারবে না বলেও দাম্ভিকতা দেখিয়ে কুরবান আলী নামে একজন সাংবাদিক পরিচয়দানকারী বলেন।
তিনি বলেন, সংবাদ প্রকাশ করলেই করবো মামলা, চালাবো মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা। ইতোমধ্যে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় অনুমোদনহীন কিছু অনলাইনে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ছড়িয়েছে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা। কোনো প্রকার প্রমাণ ছাড়াই ভুইফোর অনলাইনে এসব লিখে ছড়ানোই তাঁর কাজ। এর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দাবিও জানান এলাকাবাসী।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাপূর উপজেলার কয়েকজন জনপ্রতিনিধি বলেন, প্রশাসন ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মিলে এসব পুকুর খননের মহোৎসব চালাচ্ছেন। পুকুরের মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়। এতে রাস্তাগুলো চলাচলে অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এসব বিষয়ে ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। মুখ খুললেই নেমে আসে মিথ্যা মামলা হামলাসহ নির্যাতন।
জানতে চাইলে দূর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শরিফুজ্জামান শরিফ বলেন, আমি সবেমাত্র নির্বাচিত হয়েছি। এখনো দ্বায়িত্ব নেওয়া হয়নি। আমি এসব বিষয়ে প্রশাসনের মাধ্যমে যর্থাযথ ব্যবস্থা নিবো।
জানতে চাইলে দূর্গাপুর থানার ওসি খায়রুল ইসলাম বলেন,আমার অভিযান করার এখতিয়ার নাই। এটা ইউএনও ও এসিল্যান্ড দেখবে।
কথা বললে দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্বীকৃতি প্রামাণিক বলেন, আমি এই মুহূর্তে মোবাইল কোর্টে আছি। পরে ফোন দেন। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পুঠিয়া ও দুর্গাপুর আসনের সংসদ সদস্য,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, পুকুর খননের বিষয়গুলো আমি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা