মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী : রাজধানীসহ সারাদেশে সবজি, কাঁচামাল ও অন্যান্য পণ্য ট্রাক-পিকআপেই পরিবহন করা হয়। ঢাকার বাজারেও বেশিরভাগ পণ্য আসে সড়কপথে। তবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্য স্বল্প ভাড়ায় ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে আন্তঃনগর ট্রেনে পণ্যবাহী কোচ বা লাগেজ ভ্যান যুক্ত করলো রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে এখন থেকে শাকসবজি, মৌসুমী ফল, পচনশীল দ্রব্য যেমন- মাছ, মাংস, দুধ এসব ট্রেনে আনা-নেয়া করা যাবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় চীন থেকে আমদানি করা লাগেজ ভ্যান পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আনা হয়েছে। কৃষি পণ্য পরিবহনের জন্য এসব লাগেজ ভ্যান সুদূর চীন থেকে আমদানি করা হয়। ৫০টি লাগেজ ভ্যানের মধ্যে ২৮টি লাগেজ ইতিমধ্যে রেলের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত হস্তান্তর করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে এসব লাগেজ ভ্যানের যন্ত্রাংশ সংযোজনের (কমিশনিং)পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, যাত্রীবাহি ট্রেনে কৃষিজাত পণ্য পরিবহনসহ যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধিকরণ, বিশেষ সুবিধাদি প্রদান এবং রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে চীন থেকে এ সব লাগেজ ভ্যান আমদানি করা হয়। এর মধ্য ২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১০ টি পরে আরও ৪ দফায় মোট ৫০ টি লাগেজ ভ্যান সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় নেয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, চীনা প্রকৌশলীরা স্থানীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়ে লাগেজ ভ্যানের কোচগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কাজ করছেন। এ সকল ভ্যানে আধুনিক সুবিধাদি সংযোগ করায় মালামাল পরিবহনে ব্যাবসায়ীরা বিশেষ সুবিধা ও নিরাপত্তা পাবেন।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ সপের প্রধান ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চীন থেকে আমদানি করা লাগেজ ভ্যানের মধ্যে সাধারণ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দু’ধরনের কোচ রয়েছে। কোচগুলো কারখানায় আনার পর সেগুলোতে প্রথমে কমিশনিং, স্ট্যাটিক টেস্ট ও ডায়নামিক টেস্টের পর ট্রাফিক বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার কার্য ব্যবস্থাপক (ডাব্লিউ এম) শেখ হাসানুজ্জামান বলেন, সৈয়দপুর কারখানায় আসা ৫০টির মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২৮টি লাগেজ ভ্যান চলাচলের উপযোগী করে রেলের ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশেষ করে এ অঞ্চলের কৃষিজাত পরিবহনের জন্য এসব লাগেজ ভ্যানগুলো আমদানি করা হয়েছে। এগুলো যাত্রীবাহী ট্রেনে যুক্ত করা হলে মালামাল পরিবহন যাত্রীদের সুবিধা হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, নতুন ব্রডগেজ রেলপথে যাত্রীরা ঝাঁকুনি ছাড়াই চলাচল করতে পারবেন। উন্নত প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ ব্যবহারের কারণে যাত্রী ভ্রমণ হবে আরামদায়ক। রেলের ফিনিশড বডি প্রস্তুত হয়েছে চীনে, আর কোচগুলোর কিছু যন্ত্রাংশ এসেছে ইউরোপ থেকে। কোচের বগি এসেছে জার্মানি থেকে। এ ছাড়া হুইল, এয়ার ব্রেক, জেনারেটর এবং বগির ফিটিংসগুলো এসেছে জার্মানি ও রোমানিয়া থেকে।
তিনি আরও বলেন, রেলওয়ে কারখানায় আনা এসব কোচ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। এ কাজে রেল কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তার পাশাপাশি চীনা বিষেষজ্ঞরাও কাজ করছেন। কোচের কিছু অংশ সৈয়দপুর রেল কারখানায় ও বাকিগুলো চট্টগ্রামের পাহাড়তলী কারখানায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা