নবীনগর (ব্রাহ্মাণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে শত বছর ধরে কাজ করে আসা ক্ষুদ্র শিল্পী গোষ্ঠীর বাঁশের কারিগরদের আকস্মিক উচ্ছেদে ভোগান্তিতে ভুক্তভোগী কারিগররা।
এক সময় নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের সিংহদ্বারের আশে পাশে অস্থায়ীভাবে সরকারি খাস জমিতে কাজ করলেও মার্কেট নির্মানের কারনে প্রথম দফায় উচ্ছেদ করা হলে তারা স্কুল মাঠের এক কোনে বাঁশ জাত পণ্য তৈরির কাজ করতো। ২য় দফায় মাঠ থেকে উচ্ছেদ করা হলে জায়গার অভাবে বেকার হয়ে পড়েছেন কারিগরদের অনেকে।
স্থানিয়ভাবে 'ছইয়াল' হিসেবে পরিচিত বাঁশের কারিগররা বাঁশ-বেতের তৈরি নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ঘর-দোরের কাজ করতো তারা। দিন দিন ইট-পাথরের দালান-কোঠা ও প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে নাকাল হয়ে পড়া বাঁশের কারিগররা কোন রকমে টিকে ছিল।
আকস্মিক উচ্ছেদে দিশেহারা রুহুল মিয়া, মমিন মিয়া, সাফি মিয়া, রব্বানী মিয়া, হুমায়ুন মিয়া, বাবুল মিয়া, আলী আহম্মদ মিয়াদের মতো অনেক বাঁশের কারিগররা হয়ে পড়েছেন দুর্দশাগ্রস্ত। উচ্ছেদের ১ মাসের মধ্যে তাদের পারিবারের মৌলিক অধিকার মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে কারিগরদের কাছ থেকে জানা যায়।
অন্য দিকেবাঁশের কারিগরদের না পাওয়ায় ক্রেতারাও পড়েছেন বিপদে। বর্তমানে অনেক কারিগরই পেটের দায়ে সংসার চালাতে গিয়ে অস্থায়ীভাবে সদরের বিভিন্ন খোলা স্থানে, নদীর তীর বাঁশপট্টিতে নিজের একমাত্র সম্বল ধারালো দা নিয়ে বসে থাকেন ক্রেতার আসার অপেক্ষায়। এখানেও বিপত্তি তাদের, স্থানিয় দোকান মালিক ও দোকানদাররা অনেকে সহায় হলেও আবার অনেকে দিচ্ছেন বাঁধা।
ভুক্তভোগী কারিগর মুমিন মিয়া বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের লগে কাম করে আইতাছি, হুট কইরা উডায় দেওয়াতে আমরার না খাইয়া মরার অবস্থা।
বাঁশের কারিগর হালিম মিয়া জানান, বাপ-দাদার আমল থেকেই আমরা এন কাম করে আইতাছি। অন্য কোন কাম জানি না আর এই বয়সে করামই কি! এহন না খাইয়া মরনের অবস্থা অইচে।
সরে জমিনে গিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠটি ইট-বালি, কাঠের ফালি, ভাসমান দোকান, সাপ্তাহিক পাখির বাজার ও বাঁশের কারিগরদের কারনে দখল হয়ে গিয়েছিল। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা ও বিদ্যলয়ের পরিবেশ বজায় রাখার জন্য স্থানিয় ক্রীড়াবিদ ও সুশীল সমাজের দীর্ঘ দিনের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের নির্দেশে পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা না করেই উচ্ছেদ করা হয় বাঁশের কারিগরদের।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবু মুছা জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেন কোন দুর্ঘটনা না ঘটে ও বিদ্যলয়ের পরিবেশ রক্ষায় মাননীয় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উনাদেরসহ বাকি সব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল সিদ্দিক জানান, মাননীয় জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে উনাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী কারিগরদের কথা চিন্তা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবো।
যায়যায়কাল/৮আগস্ট২০২২/কেএম
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা