শনিবার, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিহত হিজবুল্লাহ কমান্ডার ইব্রাহিমকে খুঁজছিল যুক্তরাষ্ট্র, মাথার দাম ছিল ৭০ লাখ ডলার

যায়যায়কাল ডেস্ক: ইসরায়েলের বিমান হামলায় লেবাননে নিহত হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ইব্রাহিম আকিলকে খুঁজছিল যুক্তরাষ্ট্র। আল–জাজিরার খবর বলছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইব্রাহিম আকিলের মাথার জন্য ৭০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে আবাসিক এলাকায় কমপক্ষে দুটি ভবনে গতকাল শুক্রবার হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলার লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহর কমান্ডার ইব্রাহিম আকিল। পরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইব্রাহিম নিহত হওয়ার খবর জানায়। এর কয়েক ঘণ্টা পর হিজবুল্লাহ থেকেও ইব্রাহিমের নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়।

হামলায় ইব্রাহিমসহ কমপক্ষে ১৪ জন নিহত এবং ৬৬ জন আহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে লেবাননের গণস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

হামলায় নিহত ইব্রাহিম হিজবুল্লাহর অভিজাত ‘রাদওয়ান বাহিনীর’জ্যেষ্ঠ নেতা ছিলেন। হামলার সময় সেখানে হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনের অজ্ঞাতপরিচয় একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক চলছিল। সেখানে ছিলেন ইব্রাহিম। ইসরায়েলের সঙ্গে লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহর যে লড়াই চলছে, তাতে সম্মুখসারিতে রয়েছে রাদওয়ান বাহিনী।

লেবাননে গত মঙ্গলবার পেজার বিস্ফোরণের দিন ইব্রাহিম আহত হয়েছিলেন। গতকাল সকালে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান বলে খবর প্রকাশ করে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম হারেৎজ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়া একটি ভবনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একসময় যেখানে একটি ভবন ছিল, সেখানে এখন কেবল ধূসর ধ্বংসস্তূপ। ঘন ধুলার আস্তরণে আশপাশের রাস্তা ও গাড়ি ঢেকে যাচ্ছে। ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন লেবাননের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।

মার্কিন কর্মকর্তাদের তথ্য অনুসারে, ইব্রাহিম পরিচিত ছিলেন তাহসিন নামে। তিনি হিজবুল্লাহর শীর্ষ সামরিক দলে ছিলেন।

১৯৮৩ সালে বৈরুতে মার্কিন দূতাবাসে বোমা হামলায় জড়িত ছিলেন ইব্রাহিম। ওই হামলায় ৬৩ জন নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর একটি ব্যারাকেও হামলায় জড়িত ছিলেন ইব্রাহিম। ওই হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২৪১ মার্কিন সেনা।

ওই দুই হামলার দায় স্বীকার করেছিল ইসলামিক জিহাদ অর্গানাইজেশন নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। এটি হিজবুল্লাহর একটি শাখা গোষ্ঠী। ইব্রাহিম এই গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ সদস্য ছিলেন।

১৯৮০–এর দশকে হিজবুল্লাহয় যোগ দেন ইব্রাহিম। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তথ্যমতে, লেবাননের বাইরে অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতেন ইব্রাহিম। হিজবুল্লাহর অন্য জ্যেষ্ঠ সামরিক নেতাদের মতো ইব্রাহিমও তেমন একটা জনসম্মুখে আসতেন না, বিবৃতিও দিতেন না।

গত মঙ্গল ও বুধবার হিজবুল্লাহর সদস্যেদের ব্যবহার করা কয়েক হাজার তারহীন যোগাযোগ যন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকিতে একযোগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ৩৭ জন নিহত ও ৩ হাজার মানুষ আহত হন। এরপর আবার এ হামলার ঘটনা ঘটল।

ইসরায়েল এ নিয়ে দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বার বৈরুতে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর শীর্ষ কোনো কমান্ডারকে হত্যা করল। গত জুলাইয়ে হিজবুল্লাহর আরেক শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকর হত্যা করে ইসরায়েল। শুকর হিজবুল্লাহর সামরিক শাখার শীর্ষ কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন। ইরানের সহায়তাপুষ্ট লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সামরিক শাখায় শুকরের পর ইব্রাহিমকে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ধরা হতো।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ