মাহফুজুর রহমান বিপ্লব (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যার ঘটনায় প্রতিবেশী যুবকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট প্রতিবেশী চাচাতো বোন ফারিয়া খানমকে (১২) কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যা করেন রাসেল।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাসেল শিকদার (২২) জেলার বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের ইছাডাঙ্গা গ্রামের মো. মনোয়ার শিকদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় রাসেল শিকদার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট প্রতিবেশী চাচাতো বোন ফারিয়া খানমকে (১২) কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টার পর হত্যা করেন রাসেল। ওই শিশু একই গ্রামের বাসিন্দা। সে স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, নিজ বাড়ি সংলগ্ন মুদি দোকান দেখাশুনা করত ফারিয়া। এই দোকান থেকে বিভিন্ন সময় বাকিতে মালামাল নিতেন রাসেল। ঘটনার দিন বাকি ১৫০ টাকা দেয়ার কথা বলে তাকে কৌশলে ঘরের ভেতর ডেকে নেন তিনি। একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
ঘটনাটি যাতে কেউ জানতে না পারে সে জন্য মুখের ভেতর ওড়না ঢুকিয়ে এবং গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে। এরপর মরদেহটি নিজ গোসলখানার ভেতর রেখে পালিয়ে যান রাসেল শিকদার। এ ঘটনার পর শিশুটিকে না পেয়ে এলাকায় মাইকিং ও খোঁজাখুঁজি করতে থাকে পরিবার ও প্রতিবেশীরা। একপর্যায়ে রাসেলকে কৌশলে বাড়িতে ডেকে আনেন এলাকাবাসী। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই গোসলখানার ভেতর থেকে ফারিয়ার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নিথর দেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এরপর পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পরদিন বোয়ালমারী থানায় রাসেল শিকদারকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে হত্যা মামলা করেন শিশুর বাবা। এরপর থেকে দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (৪) ধারায় ওই আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) স্বপন পাল জানান, দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ শিশুটির পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে। এরমধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হলো অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।
এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে ফারিয়ার পরিবার। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিশুটির মা বলেন, আমরা সঠিক বিচার পেয়েছি। এখন এ রায়ের কার্যকারিতা দ্রুতই দেখতে চাই।
তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন উল্লেখ করে ফারিয়ার মা আরও বলেন, মামলার পর থেকে আসামিপক্ষ আমাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। আজকের রায়ের ঘটনায়ও আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা