ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বাগুড়িয়া ভূমি অফিস।
স্থানীয় সেবা গ্রহীতাদের অভিযোগ, ওই ভূমি অফিসের তহশিলদারের সহযোগি শাজাহান আলী খপ্পরে পড়ে সেবা নিতে আসা জনসাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়ম করে আসলেও শাহজাহান আলী বহাল তবিয়তে রয়েছেন। বাগুরিয়া ভূমি অফিসে বিগত আওয়ামীলীগের সরকারের কিছু চিহ্নিত ভুমিদুস্যর কারণে হয়রানির স্বীকার হয়েও মুখ খুলতে পারতো না ভুক্তভোগী সাধারন জনগন। নতুন জাতীয় সরকার আসার পর ভূমি অফিসের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারকারী শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে এখন ভুক্তভোগী জনসাধারণ মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
সেবাগ্রহীতারা জানান, তাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করতে তাদের নথিপত্র পর্যন্ত গায়েব করে দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃত মালিকের পরিবর্তে জমির নামজারি হয়ে যাচ্ছে অন্যের নামে। নামজারি, খারিজ, খাজনা প্রদানসহ অন্যান্য কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সেবা নিতে আসা সাধারন মানুষকে বিভিন্নভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন শাহজাহান আলী। তার এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে জমি-সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করতে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। অনেক ক্ষেত্রে জমির প্রকৃত মালিকদের অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ নিয়ে বাগুরিয়া ভূমি অফিসের তহশিলদার মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তহশিলদার নিজেই শাজাহান আলীর এই অপকর্মে সহযোগিতা করেন। তার মদদেই অসাধু চক্রের মাধ্যমে এই অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। ফলে সাধারণ মানুষ তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ন্যায্য অধিকার আদায়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। দ্রুত তদন্ত করে এসব অনিয়ম বন্ধ করা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন সেবা গ্রহীতারা।
কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, ‘শাহজাহান আলীকে টাকা না দিলে কোনো কাজ হয় না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গায়েব করে দেওয়া হয়, যাতে আমরা আর সঠিক সমাধান না পাই।’ প্রায় একই ধরণের অভিযোগ করেন, সোহেল রানা, আল আমিন, আলম মিয়া সহ অনেকে।
অভিযোগের বিষয়ে শাহজাহান আলীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে বাগুরিয়া ভূমি অফিসের তহশিলদার মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার অফিসে ৪জন জনবলের মধ্যে আমিই একমাত্র কর্মরত আছি। শাহজাহান আলী আমাকে সহযোগিতা করেন। অফিসের কাগজপত্র আদানপ্রদানের কাজ করেন। তাছাড়া এখন সব কাজ হয় অনলাইনে, তাই এখানে শাহজাহান আলীর কিছুই করার নাই। তারপরেও কেউ যদি অভিযোগ করে, তাহলে বিষয়টি যাচাই করে দেখবো।’