পাভেল ইসলাম মিমুল, রাজশাহী ব্যুরো: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ( রাবি) প্রয়োজন ছাড়াই অবৈধভাবে ইন্সটিটিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের বিভিন্ন খাতে (এমফিল ও পিএইচডি) প্রদেয় বেতন এবং ফিস আর্থিক খাতে অনিয়ম দেখা গেছে সহকারী পরিচালক (হিসাব) আব্দুল আল আনছারীর বিরুদ্ধে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট তদন্তে তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের দায় দায়িত্ব এককভাবে তিনি স্বীকার করেছেন। যা গঠিত তদন্ত রিপোর্টে এবং প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
শুধু তাই নয় আব্দুল্লা আল আনছারী তদন্তের শুরু থেকে অথ্যাৎ (১৯৯০-২০০৩) শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ভর্তিকৃত এমফিল ও পিএইচডি ফেলোদের বেতন ও রশিদ বইগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলেও তার বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসে নানা অপকর্মের থলের বিড়াল।
এছাড়াও ইনিস্টিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের আব্দুল্লা আল আনছারী বিরুদ্ধে এককভাবে অনিয়ম সহ প্রয়োজনের থেকে অধিক পরিমান অর্থ লেনদেন করে থাকেন বলে সে নিজের মুখে স্বীকার করেছেন যা তদন্ত রিপোর্টে বার বার উঠে এসেছে।
তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিবেদক আরও জানতে পারে,প্রাক্তন সহকারী পরিচালক (হিসাব) আব্দুল্লা আল আনছারী বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই পদে বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালনেও নানা অবহেলা ও দুর্নীতি আশ্রয় গ্রহণ করেছে বলে তার প্রমান পাওয়া যায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ০৫/০৬/২০০৩ তারিখে পত্রের প্রেক্ষিতে ইনিস্টিউটের জন্মলগ্ম থেকে অর্থাৎ (১৯৯০-৯১ থেকে ২০০২-৩) শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত এমফিল-পিএইচডি ফেলোদের প্রদেয় বিভিন্ন খাতের জমাকৃত হিসাব নিকাশের প্রতিবেদন প্রস্তুত করার সময়ও দেখা যায় ব্যাংক একাউন্টে কোন টাকা জমা নেই। কিন্তু দেখা গেছে আব্দুল্লা আল আনছারী ইনিস্টিউট অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্স এর নামে ব্যাংকে টাকা জমা দেন যার চলতি হিসাব নং-০০২২৩২,অগ্রণী ব্যাংক লি. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এ পর্যন্ত তার জমাকৃত টাকার পরিমান ৬ লক্ষ ৭ হাজার ৬৩০ টাকা মাত্র)।
আব্দুল্লা আল আনছারী ভাষ্যমতে প্রতিবেদনের অনুসন্ধানে আরো উঠে এসেছে যে,আনসারী কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি বরং তালিকার বাইরে যদি কেউ অর্থ পেয়ে থাকেন তাহলে সে তার নিজের পকেটের টাকা দিয়ে তা পরিশোধ করবেন অথচ আনসারী বলতো ফেলোসপদের টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছেন কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা গেছে আনছারী কোনো টাকায় জমা দেন নি!
তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী আব্দুল্লা আল আনছারীর কাছ থেকে ফেলোসপ দের টাকা জমা হিসেবে সর্বমোট ১৭,৭০,৮৫০/- (সতের লক্ষ সত্তর হাজার আটশত পঞ্চাশ টাকা),আব্দুল্লা আল আনসারী এপর্যন্ত জমা দিয়েছেন ১১,৫৭,৮৫০/- (এগারো লক্ষ সাতান্ন হাজার আটশত পঞ্চাশ টাকা)। বাকী ৬,২৩,০০০/- তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী যেহেতু ইতিমধ্যে অনেক টাকা পরিশোধ করেছেন আনছারী তাই তদন্ত কমিটি তার বিষয়টি বিবেচনা করে সুপারিশ করেছেন। নিম্নবর্নিত সুপারিশ গুলো হলোঃ-তাকে যেন চাকুরীচ্যুত না করা হয়, তিনি যেন ৩ কিস্তিতে আনছারীর কাছ থেকে পাওনা টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়,যাতে তার প্রমোশন ২ বছর না হয় আপাতত স্থগিত রাখা হয়,তার ২টি ইনক্রিমেন্ট কর্তন করা এবং ভবিষ্যতে যেন আনছারী আর কোনো প্রকার অর্থকারী স্থানে কাজ না করে।
অথচ আব্দুল্লা আল আনছারী তদন্ত কারীর তদন্ত রিপোর্টের তোয়াক্কা না করে এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। তাই জনমনের প্রশ্ন এত কিছুর পরেও কি করে এখনো তার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সে।
এই বিষয়ে আব্দুল্লা আল আনছারীর মুঠোফোনে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
পরে তিনি আরও বলেন এই বিষয়ে মুঠোফোনে কথা না বলি সামনা-সামনি এসে কথা বলেন তাহলে ভালো হয়। পর মুহূর্তে তাকে পুনরায় কল দিলে সে প্রতিবেদককে ম্যানেজ করতে চাই।
আব্দুল্লা আল আনছারীর বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভিসি ড. মো. ফরিদ উদ্দিন খান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা জানা নাই জেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো।
এই আব্দুল্লা আল আনছারীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি। এই বিষয়ে আমি অবগত নয়। পরে বিস্তারিত জেনে আপনাকে জানানো হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা