মো. রবিউল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার: খরচ পোষাতে না পেরে বান্দরবানে অনির্দিষ্টকালের জন্য হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

আজ মঙ্গলবার সকালে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, সেবার মাধ্যমে সামান্য লাভের আশায় জেলা জুড়ে কয়েকশ লোক পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করেছে। এসব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অধিকাংশই ঋণগ্রস্ত। এদের সাথে গণপরিবহন, চাঁদের গাড়ি, বার্মিজ স্টোর, ইঞ্জিনচালিত বোট, থ্রি হুইলার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন খাতে যুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে অন্তত ২০ হাজারেরও অধিক জনগণ। যারা সম্পূর্ণ পর্যটক নির্ভর। তবে ২০১৯ সাল থেকে করোনা ভাইরাস, বান্দরবানে ভয়াবহ বন্যা, সাম্প্রতিক পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতার বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।

বিগত কয়েকমাস পূর্বে সীমিত পরিসরে কিছু পর্যটন স্পট পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দিলেও দেশের
বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কাঙ্খিত পর্যটক ভ্রমনে আসতে পারেননি। ফলে এখনকার
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলোতে ব্যাপক ধস নামে। সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে জেলা প্রশাসন। যার কারণে ব্যয়ভার মেটাতে না পেরে কর্মী ছাঁটাই সহ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে অনেক বিনিয়োগকারী।

হোটেল গার্ডেন সিটির মালিক জানান, দুই তারকা মানের তাদের হোটেলটিতে দৈনিক অন্তত ৩০ হাজার টাকা খরচ আছে।পর্যটকের উপস্থতি না থাকায় তাদের হোটেলটি চলতি মাসের গত ৫ তারিখ থেকে প্রায় বন্ধ করার উপক্রম হয়েছে।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন মাস্টার জানান, দীর্ঘদিন ধরে পারিপার্শ্বিক কারণে পর্যটকের উপস্থিতি অশানুরুপ না থাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছে ব্যবসায়ীরা। খরচ পোষাতে না পারায় ইতিমধ্যে বেয়াই বাড়ি, কলাপাতাসহ জেলা সদরের প্রায় ২৫টি রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী ৩১ তারিখের পর চলতি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে আরও রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাওয়া বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

বান্দরবান আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে ক্রমান্বয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বান্দরবান জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে হোটেলের চলমান খরচ বহন করতে না পারায় অনেক হোটেলের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে হোটেল ডিমোর, লাভা তং সহ আরও কয়েকটি আবাসিক হোটেল। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে অন্যান্য হোটেলগুলো বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, ৩১ অক্টোবর পরবর্তী ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ীদের পক্ষ থেকে জেলাপ্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।