দিনাজপুর প্রতিনিধি: গত ২৩ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে মা-বাবা ও ভাই-বোনের ওপর আচমকা বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে ঘরে ঢুকে হামলা করে। মারপিট করে প্রাণের মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। কোনো উপায় না পেয়ে গত ২৭ আগস্ট দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে চারজনকে আসামি করে মামলা করেন বাবা মো. আ. মজিদ খাঁন।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- মো. সোহেল খাঁন (৩০), মো. রুবেল খাঁন (৩২)। উভয়ের পিতা মো. আ. মজিদ খাঁন। অন্য আসামিরা হলেন মো. রুবেল খাঁনের স্ত্রী ইভা বেগম (২৮) এবং মো. সোহেল খাঁনের স্ত্রী লাবনী বেগম (২৬)।
গত ৭ অক্টোবর দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে উপস্থিত না থাকায় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
জানা যায়, আসামি রুবেল খাঁন তার স্ত্রী, কন্যা সন্তানসহ যশোর সদরের নতুন উপশহর ১ নং সেক্টর সারথীর মোড় এলাকায় বসবাস করেন। এর আগে তারা যশোর সদরের নোয়াপাড়া এলাকায় থাকতেন।
বাবা মো. আ. মজিদ খাঁনের অভিযোগ, ২০১৮ সালের ১৩ জুন তাদের সৎ মা বেঁচে থাকাকালীন ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যবসা করার কথা বলে আত্মসাৎ করেন আসামি সোহেল খাঁন ও রুবেল খাঁন। ওই টাকা দিয়ে তারা তিন শতক জমি এবং পিতা-মাতা, ভাই-বোনকে ভরণপোষণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বউ, শাশুড়ির কুপরামর্শের কারণে আজ পর্যন্ত ভরণপোষণ দেওয়া তো দূরের কথা তারা কোনো খোঁজ-খবর পর্যন্ত নেন নাই। টাকা ফেরত চাইলে রুবেল ও সোহেল ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে।
মো. আ. মজিদ খাঁন যায়যায়কালকে জানান, ২০২৩ সালের ১৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে দ্বিতীয়বার পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়। জিডির রেফারেন্স অনুযায়ী পরবর্তীতে বাদী মো. আ. মজিদ খাঁন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নং আমলি আদালতে ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৫৮/২৩। আসামিরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২০২৩ সালের ৫ মার্চ দুপুরে আলীর মুদি দোকানের সামনে রুবেল, সোহেল, ইভা, লাবনী তার ওপর হামলা করেন।
তিনি আরও জানান, ফরিদপুর আদালতে ২টি মামলা করেন। তারপর থেকে নিজেদের জীবন বাঁচাতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে আসামিরা। মো. আ. মজিদ খাঁনের ওপর নেমে আসে কালো ঝড়। ২০১০ সালে ফরিদপুর জজ কোর্টে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মিথ্যা মামলার আসামি ছিলেন মো. আ. মজিদ খাঁন। মামলা নং ১৭২/২০১০। ওই মামলার বাদী ছিলেন মোছাঃ আমেনা বেগম। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার কারিবাড়ি বাজার সংলগ্ন লস্করদিয়া গ্রামে । রুবেল ও সোহেল ওই আমেনাকে খুঁজে বের করেন। তার সাথে পরামর্শ করে থানা গিয়ে পুলিশের সহযোগিতা নেন।
তারপর গত ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টায় নগরকান্দা থানা ও ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ মো. আ. মজিদ খাঁনকে গ্রেফতার দেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে ছিলেন মামলার বাদী আমেনা বেগম, রুবেল,সোহেল। নগরকান্দা থানা পুলিশ পর দিন ফরিদপুর জেল হাজতে তাকে প্রেরণ করেন।
২০২৩ সালের ১১ জুন ঢাকা হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করেন মো. আ. মজিদ খাঁন। কিন্তু দুঃখের বিষয় ষড়যন্ত্র শেষ না হওয়ার আগেই আমেনা বেগম , রুবেল, সোহেল ও তার ছোট মা আশা আক্তারকে ফুসলিয়ে অ্যাডভোকেট অনিমেষ রায়কে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে এক মাস বেশি কারাগারে রাখা হয়।
২০২৩ সালের ১৩ জুন ফরিদপুর জেলা কারাগার থেকে মো. আ. মজিদ ফরিদপুর আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। হাজতে থাকার সময় দুই ছেলে এবং ছেলের বউরা দেখা করেন। তাদের কান্নাকাটি আহাজারি দেখে ভরণপোষণের ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার মামলা তুলে নেন মো. আ. মজিদ খাঁন। কথা ছিল রুবেল ও সোহেল খান ভরণপোষণ দেবেনে এবং ওই তিন লাখ ১০ হাজার টাকা ফেরত দেবেন।
২০২৩ সালের ১৫ জুন আনুমানিক দুপুর দুইটার দিকে মো. আ. মজিদ খাঁনের স্ত্রী আশা আক্তার আসামিদের দাওয়াত করেন ছোট মা হিসেবে। তাদের আপ্যায়ন করার ঘন্টা দুয়েক থাকার পর ঝোপ বুঝে কোপ মারেন। ওই দিন বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে ড্রয়ারে থাকা ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণ যার মূল্য ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা , সাড়ে ১০ ভরি রুপা যার মূল্য ১৭ হাজার ৫০০ টাকাসহ মেমো নিয়ে তৃতীয়বার পালিয়ে যায়। ফরিদপুর আদালতের দুইটির মামলার এরা চারজন ওয়ারেন্টের আসামি। বর্তমানে পালাতক রয়েছেন।
তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন মো. আ. মজিদ খাঁন।
পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায়বিচার পেতে করজোড় দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মো. আ. মজিদ খাঁন।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা