শেখ মামুনুর রশীদ মামুন: অবশেষে সক্রিয় চোরচক্রের দুই সদস্য ধরা পড়লো জেলা গোয়েন্দা পুলিশের জালে।ময়মনসিংহে চালানো সফল অভিযানে একটি চোরাই অটোগাড়িসহ গ্রেফতার করা হয়েছে চক্রের দুই সদস্যকে।

বছরের পর বছর ধরে যারা ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অটোগাড়ি চুরি করে একে একে গিলে নিচ্ছিল সাধারণ মানুষের স্বপ্ন—তাদের একজনও ছাড় পাচ্ছে না, এমনই কঠোর বার্তা দিল ময়মনসিংহ জেলা ডিবি।

মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় ময়মনসিংহ শহরের কালীবাড়ী গুদারাঘাট সংলগ্ন এস.কে হাসপাতালের বিপরীত পাশে দূরন্ত পরিবহন কাউন্টারের সামনে পাকা রাস্তা থেকে অভিযান চালিয়ে চোরাই অটোগাড়িসহ দুই জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। অভিযানে নেতৃত্ব দেন এসআই (নিঃ) মোঃ নজরুল ইসলাম, যিনি অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখার সরাসরি নির্দেশে কাজ করেন।

গ্রেফতার হওয়া অপরাধীরা হলো— মোঃ জয়নাল আবেদীন (২৩), পিতা-মোঃ আব্দুল হেকিম, সাং-নীলগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর, বর্তমানে উত্তরখান, ঢাকায় হেলাল মার্কেট এলাকার ভাড়াটিয়া। মোঃ আব্দুল মিয়া ওরফে আব্দুল্লাহ (২৯), পিতা-মোঃ আবুল কাশেম, সাং-বাজারিপাড়া, কিশোরগঞ্জ সদর; বর্তমানে হেলাল মার্কেট, উত্তরখান, ঢাকায় জনৈক নয়ন মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে অটোচুরির একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করছিল। ময়মনসিংহ, ঢাকা ও কিশোরগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চুরি হওয়া অটোগাড়িগুলোর অনেক খোঁজই মেলে না—এই চক্রের কারণেই। চক্রটির নেপথ্যে থাকা মূল হোতাদের শনাক্তে ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করেছে ডিবি।

আটক দুই আসামির বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অটোগাড়িটি আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জব্দ করা হয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলা ডিবি জানায়, "আইনের ফাঁক গলে আর কেউ পার পাবে না। যারা মানুষের শেষ সম্বলটুকু—একটি গাড়ি—চুরি করে তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে, তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।" এমন দৃঢ় হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আরও জানানো হয়, এই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং কোনোভাবেই কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিবি অফিসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রেফতারকৃতদের হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। সেখানেই জানা যায়, চোরচক্রটির ঢাকা ও কিশোরগঞ্জে একাধিক আস্তানা রয়েছে।

সচেতন মহলের দাবি—এ ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা আরও জোরদার করা হোক এবং গ্রেফতারকৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে অন্যদের জন্য কঠিন বার্তা দেওয়া হোক।