মো. মাকসুদুর রহমান: জামালপুরের মাদারগঞ্জ ১৯৯৯ সনে তৃতীয় শ্রেণি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় মাদারগঞ্জ পৌরসভা। পরে ২০১৯ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে উন্নীত হয়। এ যেন আলোর নিচে অন্ধকারের মতো।মাদারগঞ্জ পৌরসভা কেবল নামেই প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। প্রায় ১০.৭৮ বর্গ কিলো মিটার আয়তনের এই পৌরসভায় ৫০ হাজারের অধিক মানুষের বসবাস। এ পৌরসভায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ টন বর্জ্য তৈরি হয়। অথচ এই বর্জ্য অপসারণে নেই কোন আধুনিক ব্যবস্থা।
মাদারগঞ্জে পৌরসভায় অদ্যবধি তৈরি হয় নাই স্থায়ী কোনো ডাম্পিং স্টেশন। তাই ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় বালিজুড়ী বাজারের পাশেই বালিজুড়ী টু মডেল থানা সড়কের পশ্চিম পাশেই ফেলা হচ্ছে এই বর্জ্য। এতে বালিজুড়ী টু ঝাড়কাটা সড়ক, বালিজুড়ী টু মিলন বাজার সড়ক এর পথের যাত্রীদের জন্য অরক্ষিত ডাম্পিং স্টেশনের দুর্গন্ধ এখন পৌরবাসীর নিত্য দিনের ভোগান্তি।
এতে করে পৌরবাসীর মধ্যে ছড়াচ্ছে নানা ধরনের মারাত্মক রোগ-জীবাণু। অরক্ষিত এই স্টেশনের পাশেই রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি বে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্গন্ধ নিয়ে জনজীবনে অতিষ্ঠ হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে ও বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।বিষয় টি নিয়ে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এবিষয়ে মাদারগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা পর্যাপ্ত আয় এবং জমির অভাবে স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করতে পারছেন না বলে একথা বলেন।
ফার্নিচার ব্যবসায়ী আক্কাস রানা ও হাফিজুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংলগ্নে ময়লার দুর্গন্ধে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। দুর্গন্ধের কারণে ক্রেতা আগের মতো আর আসে না।
অক্সফোর্ড একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত আল করিম বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে নিয়ে স্কুলে আসতে হচ্ছে ও বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এতে প্রায়ই আমাদের শরীর খারাপ হচ্ছে।
চাইলেনীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাহমুদা রোজী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ময়লা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ। এই দুর্গন্ধের ফলে অনেক শিক্ষার্থী নানা ধরনের অসুস্থতার কথা জানাচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বর্জ্য-আবর্জনার দুর্গন্ধের কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটের পীড়াসহ সব ধরনের রোগ হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শাহাদুল ইসলাম জানান, ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে নাগরিক সেবার পাশাপাশি পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের ময়লা-আবর্জনাকে সম্পদে পরিণত করতে পারে। তাদের সংগৃহীত বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস ও জৈবসার উৎপাদন করা সম্ভব।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার প্রশাসক নাদির শাহ নাদির বলেন, পর্যাপ্ত আয় ও জায়গা না থাকায় ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। একটি ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করতে প্রায় এক একর জমির প্রয়োজন। আমাদের পৌরসভায় ছোট হওয়ায় সেরকম জায়গা মিলছে না। আগামী অর্থ বছরে ডাম্পিং স্টেশনের স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা