যায়যায়কাল ডেস্ক: ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে এয়ার ইনডিয়ার ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় রাজস্থানে ঘরে ঘরে শোকের মাতম। রাজ্যটির অন্তত ১১ জন বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের যাত্রী ছিলেন। সবার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এদের মধ্যে পাঁচজন বাসিন্দা বাঁশওয়াড়ার, চারজন উদয়পুরের, একজন বালোত্রার এবং আরেকজন বিকানেরের শ্রীদুংগারগড় এলাকার। মৃতদের পাঁচজনই শিশু। সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা হল বাঁশওয়াড়ার একটি পুরো পরিবার শেষ হয়ে যাওয়া।
লন্ডনে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্ন ছিল প্রতীক জোশির। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ২০১৬ সালে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছিলেন প্রতীক। ৬ বছর ধরে সেখানেই কাজ করছিলেন একজন সফটওয়্যার পেশাজীবী হিসেবে।
ভারতেই থাকতেন তার স্ত্রী চিকিৎসক কামিনি জোশি, আর তাদের তিন সন্তান। অনেক দিনের পরিকল্পনা, প্রস্তুতি আর অপেক্ষার পর সেই স্বপ্ন বাস্তবের মুখ দেখতে চলেছিল।
কিছুদিন আগেই কামিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে প্রতীক জোশির সঙ্গে লন্ডনে পাড়ি জমানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। তিন সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে যাওয়ার সময়ই বিধ্বস্ত হল তাদের উড়োজাহাজ।
প্রতীক ও কামিনিসহ তাদের দুই পুত্র ও এক কন্যা সবাই মারা গেছেন দুর্ঘটনায়। এই পরিবারের মৃত্যুতে বাঁশওয়াড়া ও কামিনির উদয়পুর মেডিকেল কলেজে ছড়িয়ে পড়েছে শোকের ছায়া।
অপরদিকে, ২৪ বছর বয়সী খুশবু কানওয়ার ছিলেন বালোত্রার একটি গ্রামের বাসিন্দা। এ বছরের জানুয়ারিতে বিয়ে হয়েছিল তার। স্বামী বিপুল সিং রাজপুত লন্ডনে কাজ করেন। প্রথমবারের মতো স্বামীর কাছে যাওয়ার সময়েই থেমে গেল তার জীবন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুরো গ্রামেই নেমে এসেছে শোকের ছায়া। উদয়পুর জেলার আরও চারজন যাত্রী ওই উড়োজাহাজে ছিলেন। তারা সবাই মারা গেছেন।
রুদেরা গ্রামের ভারারদি চন্দ্র মেনারিয়া ও রোহিদা গ্রামের প্রকাশ চন্দ্র মেনারিয়া—দুজনই লন্ডনে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করতেন। একসঙ্গেই লন্ডনে ফিরছিলেন কাজের উদ্দেশ্যে। পথে মৃত্যু এসে থামিয়ে দিল তাদের যাত্রা।
ভারারদি চন্দ্র একমাস আগে লন্ডন থেকে ভারতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি লন্ডনে ফেরত যাচ্ছিলেন। উড়োজাহাজ উড্ডয়নের আগে তাকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন তার স্ত্রী ও ছেলে দীপক। সেটাই হয় তার শেষ বিদায়।
স্থানীয় মার্বেল ব্যবসায়ী পিংকু মোদীর দুই সন্তান। শাগুন মোদী ও শুভ মোদী। লন্ডনে পড়াশোনা করতেন। তারাও ওই বিমানে ছিলেন এবং নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় পত্রিকা।
বিকানেরের শ্রীদুংগারগড়ে নিহত হয়েছেন শিব পরিহার। তিনি রাজ্যের সাবেক বিধায়ক কিষ্ণা রাম নাইয়ের নাতি। লন্ডনে ব্যবসা করতেন তিনি।
মাত্র পাঁচ দিন আগে তার বাবা অভিনব পরিহার আহমেদাবাদে একটি ট্রেডিং অফিস চালু করেছিলেন—ছেলের সহায়তায়। দুর্ঘটনার দিন শিব লন্ডনে ফিরছিলেন স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ভারতে স্থায়ীভাবে ফিরে আসার পরিকল্পনায়। সেই পরিকল্পনাও শেষ হয়ে গেল একটি দুর্ঘটনায়।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে ভারতীয় এয়ারলাইনস এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজটি। ২৪২ জন আরোহী নিয়ে একটি ভবনের ওপর আছড়ে পড়ে উড়োজাহাজটি। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা