যায়যায় কাল প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতার সময় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেলের চাকা আবার ঘোরার প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে; বন্ধ হওয়ার ঠিক এক মাসের মাথায় শনিবার তা আবার চালুর নির্দেশনা এসেছে।
মেট্রোরেল পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা বলছেন, পুরোদমে চালুর আগে পরিস্থিতি যাচাই-বাছাইয়ে সোম ও মঙ্গলবার থেকে সপ্তাহজুড়ে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর প্রস্তুতি চলছে।
আর শনিবার থেকে তা চালু করতে কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এটির পরিচালনাকারী কোম্পানি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) থেকে।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক বলেছেন, আমরা সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে অপারেশন পুনরায় শুরু করতে পারব।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকালে নগরজুড়ে সংঘাতের সময় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ১৮ জুলাই বিকেল ৫টায় বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোরেল চলাচল। এরপরের দিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
পরদিন পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয় একই দিন। সেখানেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্ষতি হয়েছে।
মেট্রোরেলের কর্মকর্তারা জানান, এখন ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রপাতিসহ যেসব যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়েছে সেগুলো ঠিকঠাক করা হচ্ছে। মেট্রোরেল আবার চালু করার জন্য প্রস্তুতি চলছে।
তারা বলেন, কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশনের কন্ট্রোল রুমের সব কম্পিউটার ভাঙচুর করা হয়। টিকিট কাউন্টারের সব কম্পিউটার চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়। টিভিএম মেশিন ভাঙচুর, পিজি গেইট ভাঙচুরসহ যাত্রীদের তথ্য জানানোর ডিজিটাল ডিসপ্লে ভাঙচুর করা হয়েছে।
এছাড়া মিরপুর পল্লবি স্টেশনের ৩/৪টা টিকেট বিক্রির কম্পিউটার চুরি হয়েছে বলেও জানান তারা।
কবে নাগাদ মেট্রো রেল চালু হবে এমন প্রশ্নে এমএএন ছিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেল চলাচল পুনরায় শুরুর প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। কাল পরশুর মধ্যে ট্রায়াল রান করব। আমরা সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে অপারেশন পুনরায় শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।
কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন দুটির কী ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য গঠিত কমিটি এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যা নিয়ে আমরা এখনো প্রতিবেদন পাইনি। আশা করছি কমিটি শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দেবে এবং আমরা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে পারব। তবে এই দুই স্টেশনের কাজ যাতে শুরু করতে পারি সেই প্রক্রিয়া চলছে।
মেট্রোরেলের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ট্রায়াল শেষে শনিবার থেকে মিরপুর ১০ ও কাজিপাড়া স্টেশন ছাড়া সবগুলো স্টেশন চালু করে মেট্রোরেল চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের ডাকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। গত সোমবার সরকার পতনের সেই দিন থেকে টানা ছয়দিন ধরে কর্মবিরতিতে আছেন ডিএমটিসিএল এর ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা।
তাদের দাবি মেনে নিলেই মেট্রোরেল চালুতে কোনো বাধা থাকবে না বলে জানিয়েছেন এসব গ্রেডের কর্মকর্তা কর্মচারিরা।
একজন কর্মকর্তা বলেন, আগামী বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের দাবি দাওয়া তুলে সেগুলো সমাধান করা হবে মর্মে একটা চিঠি ডিএমটিসিএল দিয়েছে। তবে আমরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দিচ্ছি না।
ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার নানা কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছে। তবে মেট্রোরেল ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা এবারই প্রথম হয়েছে।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। এ বছরের শেষ দিন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনের সবগুলোই খুলে দেওয়া হয়। মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের কাজ এখনও চলমান।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা