শাহ্ সোহানুর রহমান, রাজশাহী : রাষ্ট্রপতি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) ভাইস চ্যান্সেলরকে (ভিসি) স্বপদে বহাল রাখাসহ নার্সিং সেক্টর নিয়ে ৪ দফা দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার দুপুরে রাজশাহী থেকে জিইপি ডাকযোগে পাঠানো পৃথক স্মারকলিপিতে বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্সের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান। রামেবি অধিভুক্ত রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ এবং অন্যান্য বেসরকারি নার্সিং কলেজের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরসহ এ স্মারকলিপি পাঠানো হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ হলো- রামেবি উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বপদে বহাল রেখে পরীক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে নার্সিংয়ে সেশনজট নিরসনের ব্যবস্থা করা, অনতিবিলম্বে সকল নার্সিং কলেজ খুলে দিয়ে ক্লাস ও স্থগিত পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করা, সরকারি ও বেসরকারি কলেজের সকল ইন্টার্ন নার্সকে জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা প্রদান করা, মেয়ে ও ছেলের শতকরা ৯০ ও ১০ ভাগ কোটা পদ্ধতি বাতিল করা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছেন, ‘রামেবির নার্সিং অনুষদে সৃষ্ট সেশনজট নিসরনে বিশেষ রোডম্যাপ গ্রহণ করেন উপাচার্য এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। সেই রোডম্যাপ অনুযায়ী ৭ মাস পিছিয়ে থাকা চতুর্থ বর্ষের (সেশন ২০১৯-২০) চূড়ান্ত পরীক্ষা সামনে সেপ্টেম্বর মাসে গ্রহণ করে ওই মাসেই ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে নোটিশে তারা জানিয়েছিলেন। কিন্তু দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেটি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কর্মকর্তাদের পদত্যাগের খবরে আমাদের পরীক্ষা নিয়েও আমরা বেশ চিন্তিত।’
তারা আরও উল্লেখ করেন, ‘উপাচার্য ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাপারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো অভিযোগ নেই। তারা শিক্ষার্থীদের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে অভিভাবকসুলভ আচরণ করে আসছেন। দেশের লাখো-কোটি অসুস্থ জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে আমাদের সেশনজট নিরসনের তাগিদে নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত রামেবিতে বর্তমান উপাচার্য ও কর্মকর্তাদের স্বপদে বহাল রাখা অতীব জরুরী। আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি। তারা পদত্যাগ করলে আমাদের অন্তত ৩ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন হুমকির মুখে পড়বে। এতে বাংলাদেশের হাজারও সাধারণ রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে।’
এ স্মারকলিপিতে সব নার্সিং কলেজ দ্রুত খুলে দেয়ার দাবির পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ‘চার বছর মেয়াদী বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্স সম্পন্ন করার পর হাসপাতালে আমাদের ৬ মাস ইন্টার্ন করতে হয়। সিনিয়র স্টাফ নার্সের সমপরিমাণ সময় ও শ্রম দিতে হয়। প্রতি সপ্তাহে ৪ দিন ৬ ঘণ্টা করে এবং দুদিন ১২ ঘণ্টা করে ‘নাইট ডিউটি’ করতে হয় বিনা ভাতায়! এটা রীতিমত শ্রম আইনেরও লঙ্ঘন! আমাদের সরকারি ও বেসরকারি নার্সিং কলেজের সকল ইন্টার্ন নার্সকে মাসিক ১৫ হাজার টাকা করে ইন্টার্ন ভাতা দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ সর্বশেষ নার্সিংয়ে মেয়েদের ৯০ শতাংশ ও ছেলেদের ১০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি বাতিল করে নার্সিং সেক্টরকে এগিয়ে নেয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে রংপুর নার্সিং কলেজের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের (এসডব্লিউও) সভাপতি মো. রায়হান আলী বলেন, ৪ দফার প্রতিটি আমাদের প্রাণের যৌক্তিক দাবি। আমরা আশা করি, রাষ্ট্রপতি ও ছাত্র-জনতার সরকার দাবিগুলো মেনে নেবেন। রাজশাহী নার্সিং কলেজের এসডব্লিউও‘র সভাপতি রিফাত আল মাহমুদ হাদি বলেন, আমরা ৪ দফার বাস্তবায়ন চাই। এটা কোনো রাজনৈতিক দাবিদাওয়া নয়। দেশ ও জনগণের স্বার্থে এসব দাবি বাস্তবায়ন করা জরুরি। পূর্বে বিভিন্ন সময়ে আমরা আন্দোলন করেছি। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আবারও আমরা মাঠের কর্মসূচিতে নামবো।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা