লিটন সরকার, রৌমারী(কুড়িগ্রাম): চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে অতর্কিতভাবে বাড়িতে হামলার ঘটনায় বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে একটি পরিবার।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের উত্তর বারবান্দা গ্রামের।
পুলিশ, স্থানীয় ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৬ আগস্ট ভোররাতে দুর্বৃত্তরা কৌশলে শয়ন ঘরে প্রবেশ করে। পরিবারের সকলকে অচেতন করে স্বর্ণলঙ্কার ও জমিজমার গুরত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। বাড়িতে এই চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামছুল হকের সাথে পাশ্ববর্তী সনতেশ আলীর দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন ১২ আগস্ট দুপুরের দিকে সামছুল হক এর বাড়িতে চুরির বিষয়টি নিয়ে পারিবারিক আলোচনা করছিলেন।
এসময় পাশ্ববর্তী সনতেশ আলী উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে হাতে লাঠিসোঠা ও দেশিয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে দল বেঁধে সামছুল হকের বাড়িতে অতর্কিতভাবে হামলা করে। একটি ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে তারা। আত্মরক্ষার জন্য বাড়ির লোকজন অন্য একটি ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। এরপরেও ক্ষান্ত হয়নি সনতেশের লাঠিয়াল বাহিনী। ওই লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে থাকা লাঠিসোঠা দিয়ে দরজা, গ্রিলের জানাল ও টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে। পরে সামছুল হকের পরিবারের লোকজনের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়াও হামলাকারীরা ওই পরিবারটিকে নানানভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটি বিচারের দাবিতে স্থানীয় মাতাব্বর ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো বিচার না পেয়ে অবশেষে সামছুল হক বাদী হয়ে ১ সেপ্টেম্বর রৌমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে থানার পুলিশ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল তদন্ত করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় মাতাব্বর ও জনপ্রতিনিধিরা মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মোকছেদ আলী জানান, বাড়ির লোকজনের হাল্লাচিল্লা শোনে এসে দেখি পাশের বাড়ির সনতেশ আলী ও তার লোকজন সামছুলের বাড়িতে হামলা করছে। বাড়ির লোকজনকে মারপিটের জন্য চেষ্টা করছে। পরে আমরা কিছু লোকজনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
আব্দুর রশিদ বলেন, লোকজনের আত্মচিৎকার শোনে এগিয়ে আসি এবং পাশের বাড়ির সনতেশ আলী ও তার লোকজন সামছুলের বাড়িতে হামলা করছে। পরে তাদেরকে থামিয়ে সরিয়ে দেই।
অভিযুক্ত সনতেশ আলী বাড়িতে হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের বাড়িতে যাওয়া আমাদের ঠিক হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া জানান, আমি উভয় পক্ষকে সালিশের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটি পক্ষ রাজি না হওয়ায় মীমাংসা করা সম্ভব হয়নি।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মতুর্জা অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।