লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: টানা বৃষ্টি ও বন্যার পানির সঙ্গে লড়াই করে বসতবাড়ি রক্ষা করছেন ১২টি পরিবার। কিন্তু যখন থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে খাল-বিল হয়ে। তখনই লক্ষ্মীপুরে ওয়াপদা খালের প্রবল স্রোতে দুইদিনে ১২টি পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে এখন দিশেহারা।
পরিবারগুলো আপন ঠিকানা হারিয়ে বর্তমানে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে। সাময়িকভাবে তাদের ঠাঁই হয়েছে নিকটতম আশ্রয় কেন্দ্র।
রোববার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের (৯নং ওয়ার্ড) পিয়ারাপুর গ্রামের ‘মধ্য চর’ গেলে চোখে পড়ে ওয়াপদা খালের এ দৃশ্য।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের পর বছর পিয়ারাপুরের ‘মধ্য চর’ এলাকায় অসংখ্য পরিবার বসবাস করে আসছে। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে কেউ না কেউ তাদের ভিটেমাটি হারাতে হয়। এ ওয়াপদা খালের গর্ভে। গত শুক্রবার ও শনিবার দুইদিনে ওয়াপদা খালের তীব্র স্রোতে ‘মধ্যে চর’ এলাকায় বসবাসরত ১২টি বসত বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে। প্রতিটি পরিবারের সদস্য মানবেতর জীবনযাপন করছে। টুমচর এলাকায় যেভাবে খালের পাশে সুরক্ষিত তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ঠিক এখান দিয়ে তীর রক্ষা বাঁধ দিলে খালের ভাঙন রোধ হবে। নয়তো এ খালের ভাঙন অব্যাহত থাকবে। খবর পেয়ে শনিবার রাতে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
ক্ষতিগ্রস্থ আবদুল মালেক, মো. দুলাল হোসেন, আব্দুল্লাহ-আল নোমান, রাজন, আলেয়া বেগম, অছুরা খাতুন ঢাকা মেইলকে জানান, দুইদিন পূর্বে আমাদের এখানে সাজানো-গোছানো সংসার ছিল। বাড়িঘর ছিল। রান্নার ঘর ছিল। উঠান ছিল। গাছপালা ছিল। সবাই সুখদুঃখে মিলেমিশে বসবাস করছি। বছরের পর বছর আমরা এখানে থেকেছি। এ রাক্ষসী খালের পেটে আমাদের সবকিছু। আমরা বড়ই নিঃস্ব। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমাদের প্রয়োজন এখন পূর্ণ বাসস্থানের। পরিবার-পরিজন মানবেতর জীবন-যাপন করছি।
ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের (৯নং ওয়ার্ড) ইউপি সদস্য মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ওয়াপদা খালের জোয়ারের সঙ্গে মধ্যে চরের ১২টি বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে। তারা এখন স্থানীয় আবিরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন ইউএনও (স্যার)।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে নদীর ভাঙনের একটা যুগসূত্র আছে। টুমচর ব্রীজের কাছেই মধ্যচর নামক এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ১২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের নির্দেশনায় রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি।