নিউজ ডেস্ক: ওপেনার লিটন দাসের হাফ-সেঞ্চুরিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রান করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। লিটন ৪৪ বলে ৬০ রান করেন।
আঙুলের ইনজুরির কারণে সিরিজের প্রথম ম্যাচ থেকে ছিটকে যান উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। আর এ ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় মুনিম শাহরিয়ার ও ইয়াসির আলির।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মোহাম্মদ নাইমের সাথে ইনিংস শুরু করেন অভিষেক হওয়া মুনিম শাহরিয়ার। ইনিংসের শুরুতেই স্ট্রাইকে ছিলেন তিনি। আফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকি দ্বিতীয় বলেই কভার দিয়ে বাউন্ডারি আদায় করে নেন মুনিম।
তবে ইনিংসের তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই বাংলাদেশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ফারুকি। রিভিউ নিয়ে ৫ বলে ২ রান করা নাইমকে বিদায় দেন ফারুকি। এরপর স্পিনার মুজিব উর রহমানের পরের ওভারের প্রথম দুই বলেই বাউন্ডারি মারেন মুনিম। অভিষেক ম্যাচে ভাল কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েও ইনিংসের পঞ্চম ও রশিদ খানের প্রথম ওভারে থামতে হয় মুনিমকে। লেগ বিফোর আউট হন তিনি। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে না পারা মুনিম ১৮ বলে ৩টি চারে ১৭ রান করেন ।
ইনিংসে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে লিটনের দুই বাউন্ডারির সুবাদে ৬ ওভার শেষে ৩৭ রান পায় বাংলাদেশ।
চার নম্বরে সাকিব ব্যাট হাতে রান খড়া কাটাতে পারছেন না। তিন ম্যাচের ওয়ানডেতে ৬০ রান করা সাকিব এ ম্যাচে ৫ রানে আটকে যান। স্পিনার কায়েস আহমেদের বলে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে মুজিবকে ক্যাচ দেন সাকিব।
সাকিবের আউটের পর ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। ৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান রেট ছিলো ৬। দশম ওভারে ১টি করে ছক্কা মারেন লিটন ও মাহমুদুল্লাহ। পরের ওভারে আরও একটি ছক্কা আসে লিটনের ব্যাট থেকে। আর ঐ ওভারেই পেসার আজমতুল্লাহ ওমরজাইর বলে লেগ বিফোর আউট হন ৭ বলে ১০ রান করা টাইগার দলনেতা। লিটনের সাথে ১৯ বলে ৩৩ রান যোগ করেন তিনি।
সতীর্থদের যাওয়া আসার মাঝে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ইনফর্ম লিটন। ১৪তম ওভারে ৩৪ বলে হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সদ্য শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক লিটন। ঐ ওভারেই বাংলাদেশের রান ১শ স্পর্শ করে।
হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটি খুব বেশি বড় করতে পারেননি লিটন। ফারুকির স্লোয়ার ডেলিভারি শর্ট ফাইন লেগ দিয়ে মারতে গিয়ে ত্রিশ গজের ভেতর ওমরজাইকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন। ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৪ বলে ৬০ রান করেন লিটন। আফিফের সাথে পঞ্চম উইকেটে ৩৮ বলে ৪৬ রান যোগ করেন লিটন।
১৭তম ওভারের শেষ বলে লিটন ফেরার পরই থামেন আফিফও। ২৪ বলে ২টি চারে ২৫ রান করেন আফিফ।
লিটন-আফিফ যখন ফিরেন, তখন ইনিংসের ১৬ বল বাকী ছিলো। বাংলাদেশের রান ছিলো ৫ উইকেটে ১২৭। শেষ ১৬ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ২৮ রান পায় বাংলাদেশ। এরমধ্যে ইয়াসির ও শরিফুলের ১টি করে চার ছিলো। আরও ১টি চার আসে লেগ-বাই থেকে। ইনিংসের শেষ বলে শরিফুলের বাউন্ডারিতে ৮ উইকেটে ১৫৫ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
শেষ ওভারে আউট হওয়া ইয়াসির ৮ ও মাহেদি হাসান ৫ রান করেন। নাসুম ৩ ও শরিফুল ৪ রানে অপরাজিত থাকেন। আফগানিস্তানের ফারুকি ২৭ রানে ও ওমরজাই ৩১ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
স্কোর কার্ড : (টস-বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ ইনিংস :
মুনিম শাহরিয়ার এলবিডব্লু ব রশিদ ১৭
মোহাম্মদ নাইম এলবিডব্লু ব ফারুকি ২
লিটন দাস ক ওমারজাই ব ফারুকি ৬০
সাকিব আল হাসান ক মুজিব ব কায়েস ৫
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এলবিডব্লু ব ওমরজাই ১০
আফিফ হোসেন ক নবি ব ওমরজাই ২৫
ইয়াসির আলি রান আউট ৮
মাহেদি হাসান রান আউট ৫
নাসুম আহমেদ অপরাজিত ৩
শরিফুল ইসলাম অপরাজিত ৪
অতিরিক্ত (বা-৫, লে বা-৮, নো-১, ও-২) ১৬
মোট (৮ উইকেট, ২০ ওভার) ১৫৫
উইকেট পতন : ১/১০ (নাইম), ২/২৫ (মুনিম), ৩/৪৭ (সাকিব), ৪/৮০ (মাহমুদুল্লাহ), ৫/১২৬ (লিটন), ৬/১২৭ (আফিফ), ৭/১৪৭ (ইয়াসির), ৮/১৫১ (মাহেদি)।
আফগানিস্তান বোলিং :
ফজলহক ফারুকি : ৪-০-২৭-২ (ও-১, নো-১),
মুজিব উর রহমান : ৩-০-২৪-০ (ও-১),
রশিদ খান : ৪-০-১৫-১,
মোহাম্মদ নবি : ২-০-১৯-০,
কায়েস আহমাদ : ২-০-২১-১,
আজমতুল্লাহ ওমরজাই : ৪-০-৩১-২,
করিম জানাত : ১-০-৫-০।
যায়যায়কাল/৩মার্চ/কেএম