প্রিন্ট এর তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ৪, ২০২৫, ৩:৫৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫, ৫:১৭ অপরাহ্ণ
শিবগঞ্জের আলু রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে
মিনহাজ আলী, শিবগঞ্জ (বগুড়া): এবছর বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও অধিক পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ উপজেলা থেকে আলু ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড এবং জাপান সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। সবকিছু মিলে আলুর দাম ভালো পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। দেশের আলু সহজে বিদেশে রপ্তানি করতে পেরে খুশি আড়তদার ও রপ্তানিকারকরা। বিগত পাঁচ বছর ধরে দেশের আলু বিদেশে রপ্তানি করছেন ৫ থেকে ৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিবগঞ্জে চলতি মৌসুমে প্রায় ১৮ হাজার ৫ 'শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবার অতিরিক্ত জমিতে আলু চাষ হয়েছে। উফশী জাতের আলুর মধ্যে মিউজিকা, ডায়মন্ড, গ্র্যানুলা, অ্যাসটিক, কার্ডিনাল, রোজেটা, ক্যারেজ এবং লাল পাকড়ি জাতের আলুর মধ্যে রয়েছে তেলপাকড়ি, পাহাড়িপাকড়ি, বটপাকড়ি ও ফাটাপাকড়ি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলনও হয়েছে বাম্পার। গত বছরের তুলনায় এবার চাহিদা বেশি থাকায় রপ্তানিকারকরা মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকের কাছ থেকে বিভিন্ন জাতের আলু ক্রয় শুরু করেছেন। এদিকে মাঠ থেকে আলু বিক্রি করতে পেরে খুশি স্থানীয় চাষিরা।
সরেজমিনে মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষেতে আলু উত্তোলনের কাজ সবে মাত্র শুরু হয়েছে। বাজারে আলুর চাহিদা ও দাম ভালো হওয়ায় উত্তোলন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আলু বেচাকেনা চলছে।
উপজেলার ভাগকোলা গ্রামের চাষি মোত্তালিব হোসেন, রহুল আমিন ও খালিদ মিয়া জানান, এবার বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘাতে আলু পেয়েছি প্রায় ৯০ মণ। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় লাভ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। প্রতি বছর যদি এমন দাম হয় তাহলে আগামীতে আলুর চাষ আরো বাড়বে।
তিনি আরও জানান, আমার জমির সব আলু মালেশিয়ার ফার্মাস এগ্রো লিমিটেড এর লোকজনদের কাছে ৫২০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। লাভও হয়েছে। আমার ক্ষেতের আলু বিদেশে যাচ্ছে বলে আমি গর্বিত।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মাসওয়া এগ্রো কোম্পানির বগুড়ার প্রতিনিধি ও শিবগঞ্জের মেসার্স সাগর ট্রেডাসের সাগর হোসেন জানান, তালিকাভুক্ত চাষির কাছ থেকে তারা ভালো মানের আলু ক্রয় করে।
বাংলাদেশের আলুর মান ভালো। সহজেই বিদেশে বিক্রি করা যায়। গত বছর ৭৫ টন আলুর চাহিদা ছিল। এবার ১০০ টনেরও বেশি আলু পাঠাতে হবে শুধু মালেশিয়াতেই। অন্য দেশ তো আছেই।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিতোশ চন্দ্র রায় জানান, এ উপজেলার মাটি খুব উর্বর। আবহাওয়া অনুকূলে এবং এলাকায় কোন বন্যা না হওয়ার কারণে যে কোন ফসল চাষ করলে খুব ভালো ফলন হয়। প্রতি বছরই এ অঞ্চলের চাষীরা শীতের সবজি সহ আলু চাষে ঝুকে পড়েন। তবে এবার টানা বর্ষা না হওয়াই বীজতলা সুরক্ষিত রয়েছে। যার জন্য এবার এই উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ীর উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং সুত্রে জানা গেছে, গত অর্থ বছরে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মধ্যপ্রাচের বিভিন্ন দেশ সহ ৩০টি দেশে ৭৮ হাজার টন আলু, বাঁধাকপিসহ অন্যান্য সবজি ১ লাখ ৬ হাজার ২৬২ টন রপ্তানী হয়েছে। এবার আলু মৌসুমে রাশিয়ায় আলু রপ্তানী হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিপ্লব শস্যভাণ্ডার এলাকা। এই এলাকার মাটি খুবই উর্বর। সব ফসল সকল আবহাওয়ায় মানিয়ে নেয়। উপজেলা থেকে বিদেশে বেশ কয়েক বছর থেকে আলু রপ্তানী হচ্ছে। এতে কৃষক উপকৃত হচ্ছে। এবার এ উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ দেখা না দিলে গতবারের মত এবারেও আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অনেক ছাড়িয়ে যাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা