শুক্রবার, ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সরাইলে পিআইও’র বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

এস.এম পারভেজ আলম আদেল, স্টাফ রিপোর্টার: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের গুরুতর ও লজ্জাজনক অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ সিফাত বিন রহমান-এর বিরুদ্ধে।

সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার এই ঘটনা এখন পুরো উপজেলায় তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪–২০২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) নগত অর্থের ১ম ও ২য় পর্যায়ে ইউনিয়নভিত্তিক ২০% রিজার্ভ বরাদ্দ থেকে সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা অনুমোদন দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সেই বরাদ্দের টাকা প্রেসক্লাবের নামে উত্তোলনের পরিবর্তে নাম পরিবর্তন করে গোপনে অন্য নামে তোলা হয়েছে। অর্থাৎ প্রেসক্লাবের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি টাকাই অন্য নামে আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা সরাসরি প্রতারণা ও দুর্নীতির শামিল।

প্রেসক্লাবের সদস্যরা বরাদ্দের অর্থ উত্তোলনের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরে গেলে তখনই তারা হতবাক হয়ে জানতে পারেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে, টাকা তোলা হয়ে গেছে!

সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শরীফ উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ডিসি মহোদয় প্রেসক্লাবের উন্নয়নের জন্য ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার অনুমোদন দিয়েছেন। অথচ পিআইও আমাদের না জানিয়ে, নাম পরিবর্তন করে প্রতারণামূলকভাবে টাকা আত্মসাৎ করেছে। এটি প্রশাসনিক দুর্নীতির এক জঘন্য উদাহরণ! আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর কঠোর বিচার দাবি করছি।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ সিফাত বিন রহমান বলেন,
“প্রেসক্লাবের নামে প্রকল্পের বরাদ্দ অনেক আগেই এসেছিল। পরে নাম পরিবর্তন করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।”

এই বক্তব্যের মধ্যেই তিনি প্রকল্পের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন, যা প্রশাসনিকভাবে গুরুতর অপরাধ।

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আবুবকর সরকার বলেন, “আমি এই বিষয়ে অবগত নই। আমি মাত্র দুই দিন হলো দায়িত্ব নিয়েছি। আপনার মাধ্যমেই বিষয়টি প্রথম জানলাম ”

জনমনে প্রশ্ন, সরকারি টিআর প্রকল্পের বরাদ্দ যদি এভাবে নাম পরিবর্তন করে আত্মসাৎ করা যায়, তবে দুর্নীতি রোধ হবে কীভাবে?

স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে, পিআইও’র বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *