সাদাফ মেহেদী, পবিপ্রবি: ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যখন নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে, তখন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) দিবসটি পালন করেছে একেবারেই নীরবে এবং সাদামাটা আয়োজনে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে ছিল শুধুমাত্র একটি ক্ষুদ্র পরিসরের র্যালি, আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল সীমিত। এর বাইরেও পুরো ক্যাম্পাসে ছিল না কোনো দৃশ্যমান সাজসজ্জা, ব্যানার, ফেস্টুন কিংবা আলোকসজ্জা। মূল ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক বা প্রশাসনিক ভবন—সবখানেই দিবসটি উদযাপন নিয়ে প্রশাসনিক অনাগ্রহের স্পষ্ট ছাপ ছিল।
আরও বিস্ময়ের বিষয় হলো, অধিকাংশ শিক্ষার্থী জানতোই না যে এদিন কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতির অভাবে অনুষ্ঠানটি প্রাণহীন হয়ে পড়ে। র্যালি ও আলোচনা সভায় অংশ নেয় সৃজনী বিদ্যানিকেতন স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী, যাদের উপস্থিতি মূলত আনুষ্ঠানিকতা পূরণের অংশ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ছিল আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। অথচ তার বর্ষপূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো উৎসাহ ছিল না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দিকেও কোনো নজর দেওয়া হয়নি—না খাবারের ব্যবস্থা, না স্মারক, না কোনো অংশগ্রহণমূলক আয়োজন। প্রশাসন দায়সারা কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন করেই দায়িত্ব শেষ করেছে।”
আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, “অনুষ্ঠান যে হবে, তা অনেকেই জানত না। কোনো নোটিশ, পোস্টার বা প্রচারণা ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ছিল না একটিও ব্যানার বা শোভা বর্ধনের চিহ্ন। দেখে মনে হয়েছে, প্রশাসন দিবসটি উদযাপনের চেয়ে শেষ করার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, বরিশালসহ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যখন তাদের ক্যাম্পাস সাজিয়ে, শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবার, চিত্রাঙ্কন, বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, মুক্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে দিবসটি স্মরণীয় করে তুলেছে, তখন পবিপ্রবিতে এমন শীতল আচরণের কারণ কী?
এই বিষয়ে ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মহসীন হোসেন খান বলেন,
“মাইলস্টোন কলেজের বিমান দুর্ঘটনায় আমরা শোকাহত। এজন্য বড় পরিসরে আয়োজন করা হয়নি। আজকের র্যালি ও আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ খুব বেশি ছিল না, এর দায় শিক্ষার্থীদের।”
তিনি আরও বলেন, “বিশেষ খাবার, ফেস্ট, সাজসজ্জা, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, জাতীয় পতাকা—এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কিছু বলেনি, তাই আমরা চিন্তাও করিনি। এখানে আয়োজক কমিটি বা প্রশাসনের কোনো গাফিলতি ছিল না। এর দায় সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি বাজেট স্বল্পতার কারণেও কিছু কিছু কাজ করা সম্ভব হয়নি।”
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা