সুমন চন্দ্র, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জে সিরাজদিখানে প্রচুর হারে বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। ২০২২ সালেই সিরাজদীখানে ৩৪ টি আত্নহত্যার ঘটনা ঘটেছে। পারিবারিক কোন্দল, প্রেমে ব্যর্থতা, এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি হলে, বিশ্বাস না থাকলে, এ ধরনের পরিবারের ছেলে-মেয়েরাও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে আত্নহত্যা করেন।
এ ছাড়া ঋণগ্রস্থ হয়ে আত্নহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ফাঁসি ঝুলে, বিষপান করেই বেশিরভাগ আত্নহত্যার ঘটনা ঘটছে।
সমাজের অনেক অভিভাভকরাই বলেছেন, যৌতুক রোধ, সামাজিক অবক্ষয় রোধ, পারিবারিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি, বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে আত্নহত্যার সংখ্যা হ্রাস করা সম্ভব। এজন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। তবে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে আত্মহত্যার প্রবণতা দিন দিন উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। থানা সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে সিরাজদীখানে আত্নহত্যার সংখ্যা ছিল ২৪ জন। ২০২২ সালে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৩৪ জন। যার মধ্যে ১৯ পুরুষ আর ১৫ জন নারী। সবচেয়ে বেশী আত্নহত্যার ঘটনা ঘটেছে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নে। চিত্রকোট ইউনিয়নে গেলো এক বছরে ৬ টি আত্নহত্যার ঘটনা ঘটে। তবে অভিযোগ না থাকায় এবং মামলা থেকে হয়রানী কিংবা বিভিন্ন ঝামেলে থেকে রক্ষা পেতে অনেক আত্নহত্যা গোপনই থেকে যায়। এর সমস্যা সমাধান কোথায় হবে তা আসলে কেউ জানে না।
গবেষক ও লেখক সাইদুল ইসলাম অপু বলেন,‘ যখন কোনো ব্যক্তির জ্ঞান-বুদ্ধি, লোপ পায়, নিজেকে অসহায় মনে করে, তখনই ধর্ম-কর্ম ভুলে মানুষ আত্মহত্যা করে বসে। আবার কেউ দুঃখ-কষ্টও অপমান থেকে আত্মরক্ষা করতে দুর্বল চিত্তের ব্যক্তিরা আত্মহননের মধ্য দিয়ে মুক্তি খোঁজে।’
সিরাজদিখান থানার ওসি এ কেএম মিজানুল হক বলেন,‘সিরাজদীখানে অধিকাংশ আত্নহত্যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কেউ অন্য কোনো নারী-পুরুষে আসক্ত হলে দুজনের মধ্যে মনোমালন্য ও মানসিক অশান্তিতে ভুগে আত্নহত্যা করে। এছাড়া হতাশা, বাবা মায়ের সঙ্গে ঝগড়াসহ ছোটখাটো বিষয়েই আবেগতাড়িত হয়ে অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নেন। এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনাতা বৃদ্ধি করতে পারলে আত্নহত্যা অনেকটাই কমে যাবে।