নিরেন দাস জয়পুুরহাট জেলা প্রতিনিধি : জয়পুুরহাটের সীমান্ত ঘেঁষা দিনাজপুরের হাকিমপুর বাংলা হিলি স্থলবন্দরে অতিরিক্ত গরমে ইতোমধ্যে গুদামগুলোতে থাকা অধিকাংশ পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
ক্রেতা সংকটে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। অতিরিক্ত গরমে ইতোমধ্যে গুদামগুলোতে থাকা অধিকাংশ পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ১০ টাকা কেজি দরে এসব পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত আছে। বন্দরে ভালোমানের ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ৫০ টাকা আর নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারকের গুদামে ভালোমানের পেঁয়াজ ৪৫ টাকা আর নিম্নমানের পেঁয়াজ ১০-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গুদামে পেঁয়াজ কিনতে আসা রিদয় হোসেন বলেন, ‘বিরামপুর থেকে হিলিতে পেঁয়াজ কিনতে এসেছি। গুদামে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট সেই পেঁয়াজ ১০-২০ টাকা কেজি দরে কিনছি। তবে ভালোমানের গুলোর দাম ৪৫ টাকা কেজি। বেশি দামের আশায় মজুত করে রাখায় এসব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে।’
গুদামে পেঁয়াজ বাছাইয়ের কাজ করছেন কর্মীরা আরেক ক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে গুদামগুলোতে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হচ্ছে। আমি নিম্নমানের কিছু পেঁয়াজ ৩০ টাকা কেজিতে কিনেছি। এগুলো বাসায় নিয়ে বাছাই করে বিক্রি করবো।’
বেশিরভাগ আমদানিকৃত পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানালেন আরেক ক্রেতা ইয়াসিন আলী। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই ভালোমন্দ দেখে বাছাই করে কিনে নিয়ে বিক্রি করবো।’
গুদামে পেঁয়াজ বাছাইয়ের কাজে নিয়োজিত ওয়াহেদা বেগম বলেন, ‘আমরা বন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারকের গুদামে পচা পেঁয়াজ বাছাই করি। প্রতি বস্তায় ২০ টাকা পাই। পচাগুলো এক জায়গায় রাখা হয়, আর ভালোগুলো গুদামে রাখা হয়। সারাদিন এই কাজ করে যা পাই, তা দিয়ে সংসার চলে।’
বন্দরের গুদাম ম্যানেজার সিদ্দিক হোসেন বলেন, ‘ভারতে যে সময় ট্রাকে পেঁয়াজ লোড করা হয়েছিল, সেসময় বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে আমদানিকৃত পেঁয়াজের মান খারাপ। এর ওপর গরমে পেঁয়াজ পচে গেছে। এখন শ্রমিক দিয়ে গুদামে বাছাই করে আলাদা করে রাখা হচ্ছে। পচাগুলো ১০ টাকা আবার কোনোটি ১৫ টাকা আবার কোনোটি ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এতে লোকসান হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।’
বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক আব্দুস সালাম বলেন, ‘বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ভারতে সরবরাহ খানিকটা কমেছে। এতে তাদের দেশে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত ১৯ আগস্ট রফতানিতে ৪০ ভাগ শুল্ক আরোপ করে ভারত সরকার। এ অবস্থায় ৪০ ভাগ শুল্ক দিয়েই আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। তবে আমদানিকৃত এসব পেঁয়াজ নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি। এর কারণ হলো পচনশীল পণ্য হওয়ায় অতিরিক্ত গরমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়তির কারণে ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। আমদানিকৃত একটি ট্রাকে ৩৬ টন পেঁয়াজের মধ্যে ২০ টন ভালো পাওয়া যাচ্ছে। বাকি সব পচা। বাধ্য হয়ে ১০-২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। তবে ভালোমানের পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি করছি।’
ক্রেতা সংকটে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন,‘স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে।তবে আমদানি কমবেশি হচ্ছে। কোনোদিন বেশি ঢুকছে, আবার কোনোদিন কম আসছে। যেমন গত বৃহস্পতিবার ২২ টি ট্রাকে ৬ শত ৪৫ মেট্রিক টন, শনিবার ৩৮টি ট্রাকে এক হাজার ১ শত ২১ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছে। এতে গত রবিবার আমদানি অব্যাহত ছিল। কাস্টমের সব প্রকার কার্যক্রম শেষে পেঁয়াজগুলো দ্রুত যেন খালাস করে বাজারজাত করতে পারেন ব্যবসায়ীরা, তার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা