এস রহমান সজীব, জয়পুরহাট : মাত্র তিনজন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে চিকিৎসা সেবা চলছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। যাদের একজনকে ক্ষেতলালের একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র’র চিকিৎসক।
হাসপাতালে জুনিয়য়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১১টি পদের ৯টিই খালি আছে দীর্ঘদিন থেকে। তাই হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা চরম সংকটে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কর্মচারীকে প্রেষণে অন্যত্র বদলি করায় কাঙ্খিত সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিক্যাল অফিসারের অনুমোদিত ৭টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৫জন। যাদের মধ্যে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অফিসার ডা: আবদুল্লাহ প্রেষণে বরিশালের বাকেরগঞ্জে কর্মরত আছেন। দু’জন মেডিকেল অফিসার আছেন বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে ঢাকা এবং বগুড়ায়। বাকি দু’জন এবং উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে নেওয়া একজন মেডিকেল অফিসার বর্তমানে প্রতিদিন হাসপাতালের বহি:র্বিভাগ ও অন্ত:বিভাগের প্রায় পাঁচ’শ রোগিকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালে মেডিসিন, সার্জারী, শিশু, ইএনটি, চক্ষু, অর্থপেডিক,চর্ম ও যৌন এবং কার্ডিওলজি বিভাগে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ খালি আছে। শুধুমাত্র গাইনী এবং এনেসথেশিয়া বিভাগে জুনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন দু’জন চিকিৎসক। এছাড়া ডা: রিমন আফরোজ নামের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাসপাতালে যোগদান করলেও কোন প্রকার ছুটি না নিয়ে তিনি গত ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারী থেকে অনুপস্থিত আছেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য হাসপাতাল থেকে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে একাধিকবার চিঠি দিয়েও কোন নির্দেশনা না আসায় সেই থেকে ওই পদে নিয়োগ বন্ধ আছে।
হাসপাতালে যোগদান করা অধিকাংশ কর্মচারীদেরও প্রেষণে অন্যত্র বদলি করায় বিড়ম্বনা বেড়েছে সেবা নিতে আসা রোগিদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের কাশিয়ারকে প্রেষণে পার্শবর্তী আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর হেল্থ ইনস্টিটিউটে বদলি করা হয়েছে। একইভাবে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের রেডিওলজিষ্ট হজে¦ সৌদি আরবে যাওয়ার কারণে তার স্থলে ক্ষেতলাল হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট লুৎফর রহমানকে প্রেষণে বদলি করা হয়েছে। ফলে সেই থেকে ক্ষেতলাল হাসপাতালে রোগিরা এক্সরে সেবা থেকে বঞ্চিত আছেন। সুইপারের ৫টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে দু’জন কর্মরত থাকলেও একজনকে প্রেষণে গোপীনাথপুর হেল্থ ইনস্টিটিউটে বদলি করা হয়েছে। কুক/মশালচীর দুটি পদই ফাঁকা আছে দীর্ঘদিন থেকে। হাসপাতালের ষ্টোরকিপারের পদ ফাঁকা থাকায় ২২ বছর ধরে ওইপদে দায়িত্ব পালন করছেন ফার্মাসিষ্ট কামরুল হাসান। এ ছাড়া আউটসোর্সিংয়ের ১৮ জনের মধ্যে ১জনকে প্রেষণে সিভিল সার্জন অফিস এবং ১জনকে গোপীনাথপুর হেল্থ ইনস্টিটিউটে বদলি করা হয়েছে। বাকি ১৬ জন কাজ করলেও বিগত দুই বছর থেকে তাদের কোন বেতন ভাতা না দেওয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মো: আতিকুর রহমান বলেন, ডাক্তার সঙ্কটের কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে পুরোপুরি হিমশিম খেতে হচ্ছে। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখানে প্রতিদিন গড়ে রোগি ভর্তি থাকে ৮০ থেকে ৯০ জন। আবার বহিঃর্বিভাগেও দায়িত্ব পালন করতে হয়। সেখানে রোগির সংখ্যা গড়ে তিন থেকে সাড়ে তিন’শ। দিন-রাত পরিশ্রমের কারণে প্রতিদিন এত চাপ আর নিতে পারছি না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: মোহাম্মদ শেখ হাসিবুর রেজা বলেন, ডাক্তার সঙ্কটের বিষয়টি তুলে ধরে গত দেড়মাসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে চারবার চিঠি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোন উত্তর মেলেনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক :মোঃ আলামিনুল হক,নিবার্হী সম্পাদক :আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল
যোগাযোগ :ফোনঃ +৮৮০২৫৭১৬০৭০০,মোবাইলঃ ০১৭১২৯৪১১১৬,Emails:jaijaikalcv@gmail.com
সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ, আর. এস. ভবন, ৩য় তলা, মতিঝিল, ঢাকা