মীর আমান মিয়া লুমান, স্টাফ রিপোর্টার: সুনামগঞ্জের ছাতক পৌর শহরের সুরমা নদীর পাড়ে খোলা আকাশের নিচে বসে ৫০ বছর ধরে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাছ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

জেলা প্রশাসকের এক নং খতিয়ান ভুক্ত প্রায় এক একর জায়গায়র উপর ১৯৮১ সালে জেলার মধ্যে প্রথম নিবন্ধিত হয় (রেজি নং ১৭৪৭) ছাতক বাজার ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড। উপজেলার এ মাছ বাজারে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটলেও নেই কোন নাগরিক সুযোগ-সুবিধা।

বাজারটি পাকা না থাকায় স্যাঁতসেঁতে কর্দমাক্ত অবস্থায় মাছ কেনাবেচা করতে হয়। স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় মাছ বিক্রেতারা হাত ধোয়াসহ প্রস্রাব, পায়খানায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রায় ৪০ বছর আগে একটি শেড নির্মাণ করলেও টিনে মরিচা পড়ে মেডটি এখন জরাজীর্ণ হয়ে মানুষ বসার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

প্রায় আড়াইশ থেকে তিনশ মাছ ব্যবসায়ী জরাজীর্ণ, স্যাঁতসেঁতে খোলা আকাশের নিচে সামিয়ানা টাঙ্গানো অবস্থায় বৃষ্টি আসলে ক্রেতারা দিকবিদিক ছুটাছুটি করে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। তখন বাজার খালি হয়ে গেলে ব্যবসায়ীরা অনিশ্চিতয়তার মধ্যে পড়ে। অনেক সময় বিক্রি না করতে পেরে মাছ নদীতেও ফেলে দিতে হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেক ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

বাজারের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় অনেক জায়গা বেদখল হয়ে পড়েছে। বাজারের পাশে কসাই পট্টি থাকায় গরু-ছাগলের বর্জ্য আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধে ক্রেতা-বিক্রেতারা নাক চেপে বাজারে হাঁটতে হয়। এতে পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীরা। নতুন ভবন নির্মাণ, একটি নলকূপ স্থাপন, বর্জ্য আবর্জনা অন্যত্র সরিয়ে নেয়াসহ একটি আধুনিক মাছ বাজার নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া এখানকার মাছ ব্যবসায়ীদের হোর দাবি।

এ ব্যাপারে মৎস্য ব্যবসায়ী লিলু মিয়া বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত অবস্থায় আছি। আবর্জনার স্তূপের উপরে বসে মাছ বিক্রি করছি।

এ ব্যাপারে ছাতক বাজার ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডর সভাপতি বাবুল মিয়া বলেন, প্রতিবছর আমরা ৭-৮ লাখ টাকায় পৌরসভা থেকে বাজারটি লিজ আনলেও পৌর সভা আমাদেরকে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। আমরা বাজারের দ্রুত সংস্কার চাই।

এ ব্যাপারে ছাতক বাজার বালি উত্তোলন ও সরবরাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা মাছ বাজারটি প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করলেও দীর্ঘদিন ধরে কোনো সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় বাজারটিতে মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই দ্রুত একটি আধুনিক মাছ বাজার নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানান, আগামী মাসে কিচেন মার্কেটের একটা টেন্ডার হবে তবে আধুনিক মাছ বাজার নির্মাণে আপাতত কোনো টেন্ডার প্রক্রিয়ায় নেই।