আমিনুল হক, শাহজাদপুর: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাথান এলাকায় ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ৪.৮৯২ কিলোমিটার আরসিসি সড়কে ব্যাপক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। সড়কটি নির্মাণ করছে রাজশাহীর ইথেন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের ঢালাইয়ের পর নিয়ম অনুযায়ী কিউরিং করা হচ্ছে না। কচুরিপানা ব্যবহার করে ঢালাই ১৫-২০ দিন ভিজিয়ে রাখার কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হচ্ছে। ঢালাইয়ের জন্য ১:১.৫:৩ অনুপাতের পরিবর্তে ১:২:৪ অনুপাত ব্যবহার করা হচ্ছে। দানাদার বালির পরিবর্তে স্থানীয় বালি এবং অপরিশোধিত, কাঁদাযুক্ত পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঢালাইয়ে ব্যবহৃত উপকরণের মান নিম্নমানের হওয়ায় এবং কিউরিং না করায় ইতোমধ্যেই ঢালাই ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। কাজ শেষ হলে সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। প্রতিটি ৭ মিটার স্লাবে ২১ ও ৩৫টি রড ব্যবহার করার কথা থাকলেও বাস্তবে ২১ ও ৩৪টি রড দেওয়া হচ্ছে। সরেজমিনে উপ সহকারী প্রকৌশলী আমির ফারুক সরকারের উপস্থিতিতে স্লাবের রড গণনা করে অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের দাবি, শাহজাদপুর এলজিইডি’র প্রকৌশলী এএইচএম কামরুল হাসান রনী এবং উপ সহকারী প্রকৌশলী আমির ফারুক সরকারের যোগসাজশেই এ অনিয়ম হচ্ছে। কাজের সঠিক তদারকির বদলে তারা ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী এএইচএম কামরুল হাসান রনী এ বিষয়ে জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকায় প্রশিক্ষণে আছেন এবং এসও’কে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশনা দেবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, এর আগেও সড়কটির নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলামের কাছে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সড়ক নির্মাণের এই অনিয়ম তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা আশঙ্কা করছেন, এভাবে কাজ চললে সড়কটি টেকসই হবে না এবং সরকারি অর্থের অপচয় হবে।