
নাজমুস সাকিব, কলাপাড়া: কলেজের মাঠে তাঁতশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। ছয় মাস আগে মেলা শেষ হলেও তোরণ, স্টলসহ বিভিন্ন রাইড এখনও বহাল। এতে মাঠে খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে।
এই চিত্র কলাপাড়া শহরের মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের খেলার মাঠের। ছয় মাস মাঠে খেলাধুলা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীসহ ক্রীড়ামোদীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে কলেজের মাঠ দখলমুক্ত করে খেলাধুলার পরিবেশ ফিরে পাওয়ার দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ করে ফুটবল ক্রিকেট খেলায় অংশ শিক্ষার্থীরা।
কলাপাড়া শহরের সবচেয়ে বড় এ কলেজের খেলার মাঠে শিক্ষার্থীসহ কিশোর-তরুণরা খেলাধুলা করে। বৃদ্ধরা হাঁটাহাঁটি করার জন্য এবং ভোরে স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিরা শরীরচর্চার জন্য মাঠটি ব্যবহার করেন। কিন্তু তারা এখন মাঠটি ব্যবহার করতে পারছেন না।
স্থানীয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ এপ্রিল থেকে ১ মাসের জন্য কলেজের মাঠটি সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের সুপারিশে ২ লাখ টাকায় কলাপাড়া পৌরশহর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি নাজমুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫টি শর্তে ভাড়া দেওয়া হয়। তবে প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশের জন্য তাঁকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। পৌরশহর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির আয়োজনে গত ২০ মে মেলা শুরু হয়। মেলায় ৫৪টি স্টল বসানো হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর সমিতির সভাপতি নাজমুলকে মাঠ থেকে স্থাপনা সরানোর জন্য চিঠি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো স্থাপনা সরানো হয়নি।
কলাপাড়া ক্রীড়া সংস্থার সদস্য জামাল আকন বলেন, আগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত লোকজন মাঠে খেলাধুলাসহ মানুষজন হাঁটাহাঁটি করতেন। সারাদিনই তরুণদের বিভিন্ন দল খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। সেই মাঠ এখন মেলার অবকাঠামো তৈরির সামগ্রী দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এ বছর কোনো টুর্নামেন্ট করা যায়নি। এভাবে একটি খেলার মাঠ দখল করে রেখে খেলাধুলা বন্ধ করে রাখা দুঃখজনক।
মেলার আয়োজক পৌরশহর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি নাজমুল আহসান জানান, ১ মাস সময় দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন জানানো হবে। অনুমতি না পাওয়া গেলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব স্থাপনা সরিয়ে ফেলা হবে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শাহ আলম মিয়া জানান, মাঠটি ২ লাখ টাকায় ভাড়া দেওয়া হয়। এর মধ্যে তাদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা দিতে ও মাঠ থেকে স্থাপনা সরাতে সমিতির সভাপতিকে চিঠি দেওয়া হলেও উত্তর দেননি। তাই এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও কলাপাড়া থানার ওসির কাছে স্থাপনা সরানোর জন্য প্রশাসনিক সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউএনও রবিউল ইসলাম জানান, মেলা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়ার পরও স্থাপনা অপসারণ করা হয়নি। এটা দুঃখজনক। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে অচিরেই মাঠটি দখলমুক্ত করার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।