বৃহস্পতিবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৪শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

নেত্রকোনায় ধান কাটার মৌসুমে শ্রমিক ও যন্ত্রের সংকটে বিপাকে কৃষক

মো. নাজমুল ইসলাম, নেত্রকোনা: বৈশাখের শুরুতেই ধান কাটার ভরা মৌসুমে তীব্র শ্রমিক ও যন্ত্র সংকটে পড়েছেন নেত্রকোনার কৃষকরা। হাওরপাড়ের এই কৃষিপ্রধান জেলায় সময়মতো ধান ঘরে তুলতে না পেরে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন চাষিরা। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ঝড়, অতিবৃষ্টি কিংবা শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় মাথায় নিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করছেন তাঁরা।

জেলার বিভিন্ন হাওরে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক জমির ধান ইতোমধ্যে পেকে গেলেও শ্রমিকের অভাবে তা কাটা যাচ্ছে না। স্থানীয় শ্রমিকের সংখ্যা খুবই সীমিত, আর যাঁরা আছেন, তাঁরা চড়া মজুরি হাঁকাচ্ছেন। এদিকে, কাগজে-কলমে জেলা কৃষি বিভাগে ৫ শতাধিক কম্বাইন হারভেস্টার থাকলেও বাস্তবে তা দেশের অন্য জেলায় চলে গেছে। ফলে যন্ত্রের ঘাটতিও প্রকট হয়ে উঠেছে।

নেত্রকোনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১০টি উপজেলায় ১৩৫টি হাওরে এবারে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদন হবে প্রায় ১২ লাখ ৬৩ হাজার টন ধান, যার থেকে প্রায় ৮ লাখ ৪২ হাজার টন চাল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মোহনগঞ্জ উপজেলার পেরিছড় গ্রামের কৃষক চন্দন মিয়া বলেন, “তিন দিন ধরে শ্রমিক খুঁজছি, পাই না। শ্রমিকের চাহিদা বেশি, দামও বেশি, তবু মেলে না।” খালিয়াজুরী উপজেলার লেপশিয়া গ্রামের আবুল কাশেম বলেন, “চাকুয়া ইউনিয়নের কোনো গ্রামেই শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। জেলার বাইরে থেকে শ্রমিক না এলে সব ধান কাটা সম্ভব নয়।”

স্থানীয় কৃষক সুশীল দাস জানান, তাঁর ৫ একর জমির ধান পাকলেও শ্রমিক না থাকায় কাটতে পারছেন না। “পাকা ধান জমিতে বেশিদিন থাকলে ঝরে যাবে,” বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, “হাওরের পাকা ধান কাটতে স্থানীয় শ্রমিকদের পাশাপাশি কিছু কম্বাইন হারভেস্টারও ব্যবহার হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, এবার উৎপাদন আশানুরূপ হবে।”

তবে শ্রমিক সংকট ও যন্ত্রের ঘাটতি দ্রুত সমাধান না হলে কৃষকদের দীর্ঘদিনের কষ্ট হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *