নুরুল আমিন, ভুরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গামারী উপজেলায় দক্ষিণ চর-বারুইটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান। ভবনের ছাদে ফাটল। খসে পড়ছে পলেস্তারা। বেরিয়ে পড়েছে ভেতরের রড ও ইট।
পিলারেও ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ভবনের তিনটি শ্রেণি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় পাশের টিনসেড দুটি কক্ষে পাঠ দান কার্যক্রম চললেও, সেটিও গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আতঙ্কে থাকেন।
১৯৭০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে নিবন্ধিত হয়। এখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫৮ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। ফলাফলের দিক দিয়ে গোটা উপজেলায় বিদ্যালয়টি এগিয়ে থাকলেও ভবনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। জরাজীর্ণ ভবনে কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান। যে কোনো মুহূর্তে ভবন ধসে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল বারী জানান, বিদ্যালয়ে কক্ষ দরকার ৮টি। কিন্তু আছে মাত্র ছয়টি। গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করছে। ভবনের অবস্থাও ভয়াবহ। অন্য কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। ভয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে চায় না।
শিক্ষিকা মোর্শেদা খাতুন বলেন, মাঝেমধ্যেই ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভয়ে ভয়ে ক্লাস করতে হয়। আতঙ্কে শিক্ষকরা যখন পড়ান তখন তারা পাঠে মনোযোগ দিতে পারেন না।
ওই এলাকার কমর উদ্দিন ও আমজাদ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা খুবই নাজুক। বাচ্চাদের পড়াশোনায় সমসা হচ্ছে। নিরসন কল্পে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, প্রায় ৭ বছর এখানে দায়িত্ব পালন করে আসছি। নতুন ভবনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করেছি।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে দক্ষ শিক্ষক আছে। প্রতিবছর ভালো ফলাফলও করছে। অথচ অবকাঠামোর অবস্থা করুণ। কোনো রকম জোড়া তালি দিয়ে পাঠদানের কাজ চলছে। কখন ভেঙে পড়ে সেই ভয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়।
তিনি আরো বলেন, গত জুলাই মাসের বন্যায় বিদ্যালয়ের টিনশেড ঘরের দুটি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার জন্য কিছু বরাদ্দ পেয়েছি। সেটা দিয়ে মেরামতের কাজ চলছে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের নতুন ভবন বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টির ভবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক নতুন ভবনের জন্য আবেদন করেছেন। আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। আশা করছি অতিসত্ত্বর সমস্যার সমাধান পাবো।
উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, দক্ষিণ চর বারুইয়াটারী বিদ্যালয়টির জন্য রিভার প্রজেক্টে প্রস্তাব করা হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ বাস্তবায়ন হবে।