বুধবার, ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

আখাউড়ায় মাদকের ‘গডফাদার’ কামালের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার লোকজন

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাদক কারবারিদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার পূর্ব আখাউড়া ইউনিয়নবাসী। এছাড়া তাদের উৎপাতে বিব্রত আখাউড়া-আগরতলা স্থল বন্দর দিয়ে আসা-যাওয়া করা দেশি ও বিদেশী পর্যটক।

মাদকের ‘গডফাদার’ কামাল মিয়ার নেতৃত্বে ভারত থেকে আসা ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য চলে যায় আখাউড়া উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

কামাল ও তার বাহিনীর উৎপাতে অতিষ্ট উপজেলার বঙ্গেরচর, ঝঝিপোল, থলেম্বর, গাজীর বাজারসহ আশে পাশের এলাকাবাসী। ধ্বংস হচ্ছে এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও যুবসমাজ। সন্তানদের নিয়ে বাড়ছে অভিভাবকদের উদ্বেগ। মাদক কারবারের পাশাপাশি দখল, চাঁদাবাজিসহ তার নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের রাজত্ব গড়ে তুলেছেন কামাল। এ ব্যাপারে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

ভারতের কলকাতা থেকে আগরতলা হয়ে আখাউড়া বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসেন বিশ্বজিৎ নামে এক নাগরিক। তিনি বলেন বন্দর থেকে বের হয়ে একটু আখাউড়ার দিকে যাওয়ার পথে একটু আগালে কয়েকজন যুবক বলে দাদা লাগবেনি, নামেন বলে রিক্সার সামনে দাড়ায়, আমি ভয় পেয়ে যাই। পরে জানলাম মাদকের নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেলো। বিষয়টি আমার জন্য ভীতিকর ও বিব্রতকর পরিস্থিতি ছিলো।

আল মামুন নামে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার পথে আখাউড়া ঝাঝিরপোল এলাকায় এমন পরিস্থিতির কবলে পড়েছেন বলে জানান। তাদের মত অনেকে এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।

নাম প্রকাশ্য না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, কামাল মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করেছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজির পাশাপাশি অন্যর জমি দখল করার হুমকি দামকি দেন। চাঁদা না দিলে জোরপূর্বক জমি দখলের হুমকিও দিচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্রাক্ষনবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার পূর্ব আখাউড়া ইউনিয়নের বঙ্গেরচর গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন। বাবা মৃত জব্বর মিয়া ছিলেন একজন দিনমুজুর ও রিক্সা চালক। অভাব অনটনের মধ্যে ছিলো পরিবার। বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন কাজে গেলেও কামাল মিয়া অল্প সময়ে টাকার মালিক হতে বেছে নেন মাদক ব্যবসা। শুরু করেন আখাউড়ার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারত হতে মাদকদ্রব্য দেশে আনা। নিজে আড়ালে থেকে গড়ে তোলেন মাদকের সিন্ডিকেট। ভারত থেকে এসব মাদক নিজ উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার শুরু করেন। রেলপথকে সহজ মাধ্যমে হিসেবে বেঁছে নেন। নারী ও শিশুদের দিয়ে মূলত এসব মাদকের চালান পাঠায় বিভিন্ন স্থানে। মাদকসহ কয়েকবার কামাল মিয়া পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। জেলও খেটেছেন তিনি। পরে জামিনে বের হয়ে পূনরায় শুরু করেন মাদক ব্যবসা। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছেন রমরমা মাদকের ব্যবসা। মাদক ব্যবসা করে বনে যান আঙ্গল ফুলে কলা গাছ। অবৈধ টাকার প্রভাবে শুরু করেন নানা অপকর্ম।

স্থানীয়রা আরো জানান, কামাল বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের আওয়ামী রাজনীতির সাথে জরিত ছিলেন। সে আওয়ামীলীগের নেতাদের প্রভার বিস্তার করে রয়ে যান ধরা ছোয়ার বাহিরে। বর্তমানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর পর সে বিএনপির কর্মী বলে দাবী করে। আবার নিজেকে কখনও বিষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী দাবী করেন। সে এসব দাবী করে পূনরায় আবারো তৎপর হয়ে উঠেছেন। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি শুরু করেন। অন্যর জমি দখলের চেষ্ঠাসহ সাধারন মানুষদের নানা হয়রানি অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাদক মামলার আসামী হয়ে সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। এ বিষয়ে র‌্যাব পুলিশসহ যৌথবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *