শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বোচাগঞ্জে একাধিক স্বামীর লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ

আশা আক্তারের অপকর্মে সহযোগিতা করছেন জনপ্রতিনিধিরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি: বোচাগঞ্জ উপজেলার ১ নং ইউপি নাফানগর বড় সুলতানপুরের ৭ নং ওয়ার্ড গুচ্ছগ্রাম আবাসন এলাকার বহুল আলোচিত মোছা. আশা আক্তার। তার বিরুদ্ধে বর্তমান স্বামী ও সেতাবগঞ্জের বাসিন্দা সাংবাদিক খান মো. আ. মজিদের অভিযোগ, তিনি একাধিক বিয়ে করে স্বামীদের সম্পদ ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আশা আক্তারের এসব অপকর্মে সহযোগিতা করছেন তার পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মীরা কাশ্মীরী ও আব্দুল মালেক ওরফে চৌধুরী।

আশা আক্তারের পিতা মো. লাইসুর রহমান(৫৫), মাতা মোছা. লিপি আক্তার(৫০), বড় বোন মোছা. রাশিদা আক্তার(২৮), স্বামী মো. দেলোয়ার হোসেন। মো. নয়ন মিয়া(২৪), মো. দেলোয়ার হোসেন(৩৫), পিতা মো. মমিন ওরফে হামিদুল। স্থায়ী ঠিকানা ৩ নং ইউপি মুর্শিহাট, সাং জালগাঁও, বর্তমান ঠিকানা গাজীপুর জেলার মির্জাপুর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় বসবাস করছেন। মো. দুলাল বড় সুলতানপুরের বাসিন্দা।

এক নং ইউপি নাফানগর বড় সুলতানপুর ৭ ও ৮ নংয়ের জনপ্রতিনিধি: ১. মোছা. মিরা কাশ্মীরি (৪০), স্বামী মো. আলিম।
২. সহযোগী মছিরের ছেলে আব্দুল মালেক (৫০) ওরফে চৌধুরী নামে পরিচিত।

এদের সাথে নাম না জানা আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা নানা অপকর্মে লিপ্ত। যেমন, অবিবাহিত তরুণী, স্বামী পরিত্যক্তা ও অধ্যবয়সী নারীদের বিয়ের প্রলোভনে মোটা অংকের দেনমোহর ধার্য করে অনেক স্বামী-সংসার ভেঙে একদিকে দেহব্যবসা করাচ্ছে, অন্যদিকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

বিভিন্ন এলাকার মো. আবুল কালাম ও মো. আনোয়ার হোসেন ঘটকের মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা করছেন মেম্বার মিরা কাশ্মীরি ও তার সহযোগী আব্দুল মালেক ওরফে চৌধুরী। তাদের সাথে জড়িত রয়েছে আরও বেশ কয়েকজন নাম না জানা চিহ্নিত মাস্তান ও সন্ত্রাসী।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, আশা আক্তার ১৩ বছর বয়স থেকে গুচ্ছগ্রাম সেনিহারি মসজিদের মোয়াজ্জেমের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে। ওই মোয়াজ্জেমকে গ্রাম্য সালিসে বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কারণ আশা আক্তারের গর্ভে এক মাস ১৫ দিনের সন্তান ছিল। লোকলজ্জার ভয়ে তার বাবা লাইসুর রহমান ও মা লিপি আক্তার তড়িঘড়ি করে সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন ৬ নং ওয়ার্ডের মোঃ আয়ুবের ছেলে মোঃ ফরহাদ (২৮)-এর সাথে মোছাঃ আশা আক্তারকে বিয়ে দেন।

দেড় বছর সংসার করার পরে এক কন্যা সন্তান লাভ করেন। তবে আশা আক্তার স্বামীর ঘরে চুরি করার অপরাধে সংসার ভেঙে যায়। কিছুদিন ঢাকায় থাকার পর তার কন্যা সন্তানটি মায়ের অবহেলার কারণে ১৭ মাস বয়সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।

এরপর ১ নং ইউপি নাফানগর বড় সুলতানপুরের সাইকেল মেকার মো. মোস্তফার ছেলে মো. হাসিনুর (৩০)-এর সাথে বিবাহ হলে ৮ মাস সংসার করেন। কিন্তু নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, ঘরের মালামালসহ চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লে সংসার ভেঙে যায়।

ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল বাজার সংলগ্ন মো. আশরাফুল(৭০) এর সাথে মাত্র ১৫ দিন সংসার করার পর জমি বিক্রির লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার কারণে সংসার ভেঙে যায়।

সর্বশেষ সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন ৬ নং ওয়ার্ডের ঝাড়বাড়ির মৃত মহির উদ্দিন খানের ছেলে মো. আ. মজিদ খানের (৬১) সাথে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করেন। এই সংসারে দুটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। ৬ বছর সংসার করার পর পিতা লাইসুর রহমান, মাতা লিপি আক্তার, বড় বোন রাশিদা, ছোট ভাই নয়ন মিয়া, দুলাভাই দেলোয়ার হোসেন, এবং মিরা কাশ্মীরি ও আব্দুল মালেক ওরফে চৌধুরীর কুবুদ্ধিতে স্বামীর বাড়ি বিক্রির ১৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে পলাতক হন।

বর্তমানে আশা আক্তার গুচ্ছগ্রামে পিতা-মাতার কাছে বসবাস করছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ