বুধবার, ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আশুগঞ্জের উন্নয়ন ও জনআস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন ইউএনও রাফে মোহাম্মদ ছড়া

তানভীর হাসান তৌফিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: প্রতিভা কোনো সীমাবদ্ধ সিদ্ধিতে সন্তুষ্ট থাকে না, অসন্তোষই তার জয়যাত্রা পথের সারথি- বলেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

আশুগঞ্জ উপজেলার ইউএনও রাফে মোহাম্মদ ছড়া। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বকে শুধুমাত্র নির্ধারিত ছকের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে উপজেলার উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়কে সম্প্রসারিত করাসহ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং গ্রামীণ জনগণের সমস্যা ও দুর্ভোগ নিরসনে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

তিনি আশুগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে তার সততা ও কর্মদক্ষতায় পাল্টে গেছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরের কর্মকাণ্ডে ফিরে এসেছে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা। কমেছে জনভোগান্তি আর বৃদ্ধি পেয়েছে জনসেবার মান। আশুগঞ্জ উপজেলাকে একটি উন্নত আধুনিক জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন তিনি। জনবান্ধব এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলার জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

উপজেলার যেকোনো অবৈধ ও অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার। তিনি কোনো অভিযোগ পেলে তার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন। তাছাড়া গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও মুঠোফোনের মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগ দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সমস্যার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সেবা প্রদান করে সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বা সরকারি দান-অনুদান সরেজমিন পরিদর্শন করে তা শতভাগ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সর্বদা ছুটে বেড়ান উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের গ্রাম, অঞ্চলে।

মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, বাল্যবিবাহ রোধ এবং এলাকার ঝগড়া, দাঙ্গা দমনে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সেবার মান বৃদ্ধি করার জন্য নিয়মত তদারকি করে থাকেন, যার ফলে উপজেলার প্রতিটি দপ্তরে সেবার মান গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশেষ করে আশুগঞ্জ উপজেলার শিক্ষার মান উন্নয়নে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া। শিক্ষাবান্ধব ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন করেন। কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের গুণগত এবং লেখাপড়ার জন্য মানসম্মত বিদ্যাপীঠ গড়ে তোলার নানা কার্যক্রম করেছেন ইতোমধ্যে। কখনো কলেজ, মাদ্রাসা, বিদ্যালয়ে ইউএনওর ঝটিকা অভিযানের ফলে নিয়ম মাফিক চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রম।

তাছাড়া ইতিমধ্যে আশুগঞ্জের সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়,মাদ্রাসায় শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবক সমাবেশ করেছেন। শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যায় পড়তে বসছে কিনা তার জন্য তিনি আশুগঞ্জের প্রতিটি এলাকায় গিয়ে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন। যা ইতিপূর্বে আশুগঞ্জ উপজেলাবাসী খুব কমই দেখেছেন।

তরুণ স্বেচ্ছাসেবী ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের ‘আইডল’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন ইতোমধ্যেই।

মাদকমুক্ত উপজেলা গড়তে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনও করেন তিনি। বিশেষ করে আশুগঞ্জ খেলাধুলার জন্য তেমন কোনো মাঠ ছিল না। এলাকাবাসীর আবেদনের ফলে ইউএনও রাফে মোহাম্মদ ছড়া আশুগঞ্জ তরুদের কথা চিন্তা করে আশুগঞ্জ রেলস্টেশনের পাশে একটি মাঠ করে দেওয়ার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

আশুগঞ্জের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি কঠোর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত যেকোনো সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি ফি’র অতিরিক্ত অর্থ নেয়া বন্ধ করতেও ভূমিকা রয়েছে তার। তাছাড়া জরুরি জন্মনিবন্ধন সংশোধনের প্রয়োজনে কেউ তার কাছে গেলেই তিনি তৎক্ষণাৎ তা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করেন। সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ইউএনও।

মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন ও মাটি কাটা বন্ধেও রয়েছে ইউএনও বিশেষ খবরদাবি। গত কিছুদিন পূর্বে কিছু অসাধু ব্যাক্তিরা যখন আশুগঞ্জ মেঘনা নদী থেকে যখন অবৈধভাবে বালি উত্তোলণ করছিল,তখন ইউএনও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করে তা বন্ধ করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছেন বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে।

মেঘনা নদীর বালি উত্তোলনে বন্ধের জন্য অসাধু বালি ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট তাকে হত্যা করার হুমকি দিলেও তিনি ভয় না পেয়ে আশুগঞ্জবাসীর কথা চিন্তা করে সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে তা বন্ধ করেন। যার ফলে আশুগঞ্জ উপজেলার মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি।

সাধারণ মানুষ যে কোন সমস্যা নিয়ে তার কাছে গেলেই তিনি সকলের কথা শুনে হাসিমুখে সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেন। এতেই সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন ইউএনও। দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে সম্মান ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন অল্প সময়েই।

প্রশাসনিক নানা উদ্যোগের পাশাপাশি অনেক সময় ব্যক্তিগত উদ্যোগ এবং নিজের অর্থে পাশে থেকেছেন। অনেক শিক্ষার্থীকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে লেখাপড়া করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মাঝে বিভিন্ন সময় হুইলচেয়ার সহ বিভিন্ন উপকরণ প্রদানের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও প্রসংসনীয় কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চলেছেন।

ইউএনও’র এসব সাফল্যের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি সেলিম পারভেজ বলেন, ‘সরকারের একজন উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীল প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং মানবসেবক হিসেবে ইউএনও অসাধারণ একজন মানুষ। সরকারের অর্পিত প্রতিটি দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সাথে তিনি সঠিক ভাবে পালন করেছেন। তার ভালোবাসা এবং সততায় আশুগঞ্জের আপামর জনসাধারণ মুগ্ধ। বিশেষ করে আশুগঞ্জের শিক্ষার মানোন্নয়নে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, আশুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফে মোহাম্মদ ছড়া একজন সৎ ও ক্লিন ইমেজের মানুষ। তাকে কোন দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারেনি, তিনি সবসময় সমাজের অনিয়ম, দূর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন। তার এসব কাজে আমরা সন্তুষ্টি।

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) ৩৬তম প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া। তার কর্ম জীবনের শুরু থেকে মাঠ প্রশাসনে গুরুত্বের সহকারে মানুষের সেবা করে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কর্মে বিশ্বাসী, আমার দায়বদ্ধতা থেকেই এই সকল কাজ করে যাচ্ছি। শুধু একজন কর্মকর্তা হিসেবে নয় এছাড়াও দেশের নাগরিক হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ