শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি, হুমকিতে পরিবেশ

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী: নীলফামারীতে অবৈধভাবে তৈরি মাটির চুল্লিতে ফলদ ও বনজ গাছের কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ভাটিয়া পাড়া গ্রামে মাটির তৈরি চুল্লিতে এসব কয়লা উৎপাদন করে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করে চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় একদিকে যেমন দূষিত হচ্ছে পরিবেশ অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল ও গাছপালা। যার ফলে ঝুঁকির মুখে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কোনো অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে অবৈধ এই কয়লা তৈরির কারখানা। ফসলি জমি নষ্ট করে এসব চুল্লি বসানো হয়েছে। বিশেষ উপায়ে তৈরি এই চুল্লিগুলোতে প্রতিদিনই শতাধিক মণ কাঠ পোড়ানো হয়ে থাকে। কয়লা তৈরির এ কারখানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বা স্থানীয় প্রশাসনের কোনো অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি কারখানার মালিক ফরিদ ইসলাম। তিনি গত ২ মাস ধরে কয়লা তৈরির কারখানা চালাচ্ছেন বলে প্রতিবেদককে জানান।

ভাটিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো: বাহার আলী শেখ (৪০) জানায়, কয়লা তৈরির কারখানা থেকে যখন কালো ধোঁয়া বের হয় তখন ঘরে থাকা যায় না। বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার কারনে চোখ জ্বলে, শ্বাস নেওয়া যায় না ও অনেক দুর্গন্ধ ছড়ায়। আমার আব্বা হাটের রোগী, যখন কালো ধোঁয়া আসে তখন ঘরে থাকতে পারে না।

আরেক বাসিন্দা সুমারি খাতুন (৬০) ও শাপলা বেগম (২৫) জানায়, মাটির তৈরি চুল্লিতে আগুন জ্বালালে কালো ধোঁয়ায় আশপাশ ছেয়ে যায়, এতে চোখ জ্বলে, শ্বাস নেওয়া যায় না এবং বুক জ্বালাপোড়া করে।

ওই এলাকার আরেক শতবর্ষি বৃদ্ধ সোরহাব হোসেন (১১১) জানায়, কয়লা তৈরির কারখানার কাঠ পোড়ানো ধোঁয়ার গন্ধে নাক জ্বলে, খুব অসুবিধা লাগে ও রাতে শ্বাস কষ্টের কারনে ঘুমাতে কষ্ট হয়। কয়লা তৈরির কারখানার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার কারনে আশপাশের ২৫-৩০ টি বাড়ির বাসিন্দা কষ্টে দিনাতিপাত করছে বলে জানান তিনি।

নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, চুল্লিতে কাঠ পোড়ানোর সময় চুল্লি থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় চোখ জ্বালাপোড়া করে। এছাড়াও কালো ধোঁয়ার ফলে গাছপালা ও ফসলি জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে।

কারখানার ম্যানেজার মো: আইনুল হকের সাথে কথা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা জানায়। তিনি কারখানার মালিকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

এবিষয়ে কারখানার মালিক মো: ফরিদ ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

নীলফামারী জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কারখানার বিষয়টি জেনেছি, অতিসত্বর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ