
শাহ ইমরান,কুমিল্লা প্রতিনিধি : গত ২৪/০১/২০২৪ তারিখ বুড়িচং থানাধীন কালাকচুয়া হাইওয়ে পুলিশ সুপার সিসি ক্যামেরার মিটারের জন্য স্থাপিত পোল হতে একটি ১০ কেভি ট্রান্সফরমার চুরির মামলা রুজু করা হয়।
উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলার কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার
একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তি ও স্থানীয় সোর্স এর সহায়তায় আন্তঃজেলা ট্রান্সফরমার চোর চক্রকে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
আজ রবিবার ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান বলেন, কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এই ঘটনায় জড়িত আসামী মোঃ মনির হোসেন(৩২) কে তার বাড়ি চান্দিনা হতে গ্রেফতার করা হয়। মোঃ মনির হোসেনের দেওয়া তথ্য মতে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকা থেকে সক্রিয় চোর চক্রের সদস্য মোঃ সোহেল (৩০) কে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান আরো বলেন,
আসামীদের দেওয়া তথ্য মতে উক্ত চুরির
জড়িত আসামী কামরুল হাসান (৩২), মাঈন উদ্দিন (২৮) ও রুবেল আহমেদ মিন্টু (২৯)।
মাঈন উদ্দিন(২৮) এর মা-বাবার দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামক দোকান হতে পূর্বে চুরিকৃত মালামাল ১। তামার তার ১৬ কেজি, ২ । ছোট-বড়
স্টিলের পাত ৫০ কেজি, ৩। তামার কয়েল ০৪টি যার ওজন ৪৪ কেজি, ৪। লোহার তার ১৪ কেজি ৫০০ গ্রাম, ৫। লোহার তৈরি কয়েলের
ঢাকনা ০৩টি, ৬ । ট্রান্সফরমারে ঢাকনা ০১টি উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানায় যে, তাঁরা
দীর্ঘদিন যাবৎ কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ট্রান্সফরমারের তামার তার চুরি করে শাকতলার রুবেলের মাধ্যমে নোয়াগাঁও চৌমোহনী
এলাকায় মা-বাবার দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামক ভাঙ্গারীর দোকানের ম্যানেজার মাঈন উদ্দিন ও তাঁর দোকানের মালিক আক্তারের কাছে বিক্রি
করে। উল্লেখ্য, আসামী রুবেল ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ রেখে চোরাই মাল বিক্রিতে মূল ভূমিকা রাখে।
আসামী মাঈন উদ্দিন ও পলাতক আসামী আক্তার চোরাইমাল ক্রয় ও ঢাকায় বিক্রির মূল হোতা।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানায় যে, তাঁরা ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাঁরা ৩/৪ বছর
যাবৎ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং, চান্দিনা, দাউদকান্দি, দেবিদ্বার, সদর দক্ষিণ ও বিভিন্ন থানা এলাকায় এবং পার্শ্ববর্তী জেলা চাঁদপুর,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ট্রান্সফরমারের তামার তার চুরি করে আসছে। তাঁরা দিনের বেলায় টার্গেট
ট্রান্সফরমারের স্থানে রেকি করে এবং রাতের বেলা গিয়ে ট্রান্সফরমারের ঢাকনা খুলে তামার তার নিয়ে চলে আসে। ট্রান্সফরমার থেকে তামার
তার চুরি করতে তাদের মাত্র ২০ থেতে ২৫ মিনিট সময় লাগে। চুরি করার পরে ট্রান্সফরমারের খালি খোলস (বক্স) সাধারণত ঘটনাস্থলেই
ফেলে দেয়। অত্র মামলার তদন্ত ও অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪
ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, আসামী মোঃ মনির হোসেন এর বিরুদ্ধে পূর্বে ০১ টি চুরি মামলা ও ০১টি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা রয়েছে। আসামী মোঃসোহেল (৩০) এর বিরুদ্ধে পূর্বে ০১ টি চুরি মামলা, ০১টি মাদক মামলা, ০১টি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা ও ০১টি মারামারির মামলা রয়েছে।
আসামী রুবেল আহমেদ মিন্টু (২৯) এর বিরুদ্ধে পূর্বে ০৬টি মাদক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো,
১/ মোঃ মনির হোসেন (৩২), পিতাঃ মকবুল হোসেন, মাতাঃ রাজিয়া বেগম, ঠিকানাঃ বাড়ি/মহল্লা- নাসির উদ্দিন মুন্সি বাড়ী, গ্রাম-
কাজিয়াতল, ওয়ার্ড- ৬, ইউনিয়ন – দারেরা, থানা- মুরাদনগর, জেলা- কুমিল্লা
২/ মোঃ সোহেল (৩০), পিতাঃ মোঃ সুন্দর আলী, মাতাঃ লুৎফা বেগম, ঠিকানাঃ বাড়ি/মহল্লা- মধ্যম পাড়া গ্রাম- আইলকামারা, ইউনিয়ন-
মাইঝখার, থানা- চান্দিনা, জেলা- কুমিল্লা।
৩/ কামরুল হাসান (৩২, পিতাঃ জহিরুল ইসলাম, মাতাঃ তাহমিনা বেগম, ঠিকানাঃ বাড়ি/মহল্লা- হোল্ডিং নং-১০/৬, পূর্বপাড়া, গ্রাম-
ভাটপাড়া, ওয়ার্ড- ১নং (সিটি কর্পোরেশন), থানা- কোতয়ালী, জেলা- কুমিল্লা
৪/ মাঈন উদ্দিন (২৮), পিতাঃ আব্দুর রব, মাতাঃ আয়েশা বেগম, ঠিকানাঃ বাড়ি/মহল্লা-ভূইয়া বাড়ী, গ্রাম- দক্ষিণ দূর্গাপুর,ওয়ার্ড-০৫,
ইউনিয়ন- বলরামপুর, থানা-তিতাস, জেলা-কুমিল্লা
৫/ রুবেল আহমেদ @মিন্টু (২৯) পিতাঃ মমতাজ উদ্দিন @মত্তাজ মিয়া, মাতাঃ মৃতঃ রোকেয়া বেগম, ঠিকানাঃ বাড়ি/মহল্লা- দক্ষিণ পাড়া
(বাজারের সাথে), গ্রাম- দক্ষিণ গ্রাম, ওয়ার্ড-১, থানা- বুড়িচং, জেলা- কুমিল্লা
উদ্ধারকিত চোরাই মালামাল গুলো হলো,
১| তামার তার ১৬ কেজি,
২। ছোট-বড় স্টিলের পাত ৫০ কেজি,
৩। তামার কয়েল ০৪টি যার ওজন ৪৪ কেজি,
৪। লোহার তার ১৪ কেজি ৫০০ গ্রাম,
৫। লোহার তৈরি কয়েলের ঢাকনা ০৩টি,
৬। ট্রান্সফরমারে ঢাকনা ০২টি,
৭। ট্রান্সফরমারের খালি খোসা ০১টি ।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশফাকুজ্জামান, নাজমুল হাসান রাফি, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।