মঙ্গলবার, ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

চট্টগ্রামে মুদি দোকানির আড়তে ১২ টন টিসিবি পণ্য: জড়িত গ্রেফতার ৭

বশির আলমামুন,  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :

 চট্টগ্রাম নগরীতে ভোগ্যপণ্যের একটি গুদাম থেকে প্রায় ১২ মেট্রিকটন টিসিবি’র তেল-মসুর ডালসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গরীব মানুষের জন্য সরকারের বরাদ্দ দেওয়া কম দামের এসব তেল-ডাল অবৈধ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে গুদামজাত করা হতো। এরপর টিসিবির প্যাকেট পরিবর্তন করে চড়া দামে বাজারজাত করতো এই চক্রটি।

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর চান্দগাঁও থানার উত্তর মোহরা এলাকায় জনৈক ‘দেলোয়ারের গোডাউনে’ অভিযান চালিয়ে এসব পণ্য উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতার সাতজন হলেন- দেলোয়ার হোসেন (৩২), মো. মনির (৩২), নুর আলম (৪৮), মো. জসিম (২৩), সাগর মোল্লা (২৪), মো. সালমান (২৭) এবং মো. রায়হান (১৯)।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর  জানিয়েছেন, নগরীর চান্দগাঁও কাজীরহাট বাজারে দেলোয়ার হোসেনের পাইকারি ও খুচরা ভোগ্যপণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠান আছে। সেই প্রতিষ্ঠানের আড়ত উত্তর মোহরা এজাহার শাহ মাজার সংলগ্ন মোহরা কোম্পানির বাড়ির রাস্তার পাশে, যা দেলোয়ারের গোডাউন নামে পরিচিত।

মনির দেলোয়ারের প্রধান সহযোগী। সে টিসিবির পণ্য বিভিন্ন পন্থায় বিভিন্নজনের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেলোয়ারের গুদামে পৌঁছে দেয়। পরে সেই পণ্য দেলোয়ার তার কর্মচারীদের মাধ্যমে টিসিবির স্টিকার খুলে নামীদামী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্টিকার লাগিয়ে খুচরা দোকানিদের কাছে সরবরাহ করে। দুই কেজির প্যাকেট থেকে মসুর ডাল ৫০ কেজির বস্তায় মেশানো হতো। পরে সেগুলো স্থানীয় বাজারে নিয়ে খুচরা হিসেবে চড়া দামে বিক্রি করতো।

রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে দেলোয়ারের ‍গুদাম থেকে পাঁচ হাজার ৪০০ লিটার সয়াবিন তেল এবং ছয় হাজার ৩৫০ কেজি মসুর ডাল জব্দ করা হয়েছে। এর দাম এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা বলে ওসি জাহিদুল জানিয়েছেন।

ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, ‘ডিলাররা ট্রাকের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য যেখানে বিক্রি করেন, সেখানে এজেন্ট ঢুকিয়ে দেয় দেলোয়ার ও মনির। দরিদ্র সেজে তেল, মসুর ডালসহ যেসব পণ্য টিসিবি বিক্রি করে সেগুলো কিনে আড়তে মজুত করে। আবার গরীব লোকজনের কাছ থেকেও সামান্য বাড়তি দামে কিনে মজুত করে। এছাড়া আরও বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় তারা টিসিবির পণ্য সংগ্রহ করত বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। সেগুলো আমরা যাচাইবাছাই করে দেখছি।’

সূত্রমতে, টিসিবি নিজেরা ছাড়াও ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের স্থানীয় নেতারাও নানাভাবে টিসিবির পণ্য কিনে নিজেদের ব্যানার লাগিয়ে বিক্রি করেন। এসব পণ্যের কিছু অংশ গরীব মানুষদের কাছে বিক্রি করা হলেও বড় অংশই এভাবে কালোবাজারির মাধ্যমে খোলাবাজারে চলে যাচ্ছে।

এ ঘটনায় নগরীর চান্দগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হলেও চক্রের ‘প্রভাবশালী’ মহলের কাউকে আইনের আওতায় আনতে না পারার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ