শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

জীবনকে ফুলের মত পবিত্র করে গড়ে তুলতে হবে : মন্ত্রিপরিষদ সচিব

লিউল্লাহ খান, স্টাফ রিপোর্টার: মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেছেন, ফুল পবিত্রতার প্রতীক, সৌন্দর্যের প্রতীক। ফুল মানুষের মনে প্রশান্তি এনে দেয়, মানুষের মনে নির্মল আনন্দ নিয়ে আসে। আমরা যারা দায়িত্বশীল আছি এবং ভবিষ্যতে যারা দায়িত্ব গ্রহণ করবে সবার জীবনকে ফুলের মত পবিত্র করে গড়ে তুলতে হবে। ফুলের সমারোহে এসে মানুষ সব মন্দ কাজ ভুলে সমাজের ইতিবাচক কার্যক্রমে নিজেকে সম্পৃক্ত করে। ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ-গাঁদা প্রভৃতি দেশী বিদেশী ১৩৬ প্রজাতির ফুলের পসরা বসেছে এ মেলায়। ফুলের সৌরভে চারদিক মাতোয়ারা। ফুলের সুবাসে সুবাসিত পুরো চট্টগ্রাম। এমন নয়নাভিরাম ফুল উৎসব আজ শুরু হয়েছে।

শনিবার সকালে ফৌজদারহাটে দক্ষিণ পার্শ্বে ডিসি পার্কে অনুষ্ঠিত মাসব্যাপী চট্টগ্রাম ফুল উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফিতা কেটে, বেলুন ও শান্তির কপোত উড়িয়ে মাসব্যাপী (৪ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রæয়ারি) চট্টগ্রামম ফুল উৎসবের উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে ভাসমান ফুল বাগানসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের সমারোহ পরিদর্শন করেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চট্টগ্রামের বড় ঐতিহ্য হচ্ছে মেজবান। এটা বছরের পর বছর ধরে চলছে বিধায় ঐতিহ্যতে রূপ নিয়েছে। একইভাবে যদি এ ফুল উৎসব টিকিয়ে রাখা যায় আগামীতে এটাও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে রূপ নেবে। মানুষের মনের প্রশান্তি মেটাতে এ ধরনের উৎসবের প্রয়োজন রয়েছে। চট্টগ্রামের মানুষের এ উদ্যোগ যখন দেশের সবাই জানতে পারবে তখন অন্যরাও ফুল উৎসব করার জন্য এগিয়ে আসবে এবং এটার জন্য সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।

তিনি আরো বলেন, ফুল আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফুল মনের জড়তা, সংকীর্ণতা দূর করে মানুষের মনকে নির্মল আনন্দ দেয়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্তআমাদের জীবনে ফুল ব্যবহার হয়ে থাকে। আজকে ১৩৬ প্রজাতির প্রায় ১ লক্ষ ফুল দেখে আমার মন প্রশান্তিতে ভরে গেছে। আগামী প্রজন্মের মনে ফুলের মাধুর্যকে ফুটিয়ে তুলতে এ ফুল উৎসব সহায়তা করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশন ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেন, সমাজের সকল স্তর থেকে নেতিবাচক মনোভাব দুর করে ফুল সমাজে ভালবাসার নতুন বারতা নিয়ে আসে। সেই আকাঙ্খাকে সামনে রেখে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে সীতাকুন্ড উপকূলে বেদখল হওয়া ১৯৪ একর জায়গা উদ্ধার করে জেলা প্রশাসন ৩য় বারের মতো আয়োজন করে চট্টগ্রাম ফুল উৎসবের।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, আপনার সবাই জানেন ফুল পবিত্রতার প্রতীক। আমরা মানুষকে যখন আর্শীবাদ জানাই তখন বলি, তোমার জীবন ফুলের মত সুন্দর হোক। তাইতো ফুল উৎসব। আগে এ জায়গাটা মাদকের অভয়ারণ্য ছিল। দখলদার ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ১৯৪ একর জায়গাকে উদ্ধার করে ফুলের পবিত্র ভ‚মিতে উন্নীত করতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি। এ ফুল উৎসবকে শুধু মাসব্যাপী না করে সারাবছর যাতে করা যায় এবিষয় নিয়ে আমাদের চিন্তা রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে ও কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুমা জান্নাত এবং চান্দগাঁও ভূমি সার্কেলের সহকারী কমিশনার ইউসুফ হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ফুল উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন, স্থানীয় সরকারের অতিরিক্ত সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোঃ খোরশেদ আলম খান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোঃ নুরুল্লাহ নুরী। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোঃ নোমান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.এ) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ সাদি উর রহিম জাদিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ শরীফ উদ্দিন, সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সকল এসি-ল্যান্ড, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের সকল কর্মচারী, শিক্ষার্থী, সুধীজন ও স্থানীয় শিল্পী, কলাকুশলী, অসংখ্য দর্শণার্থীসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় নৃত্য, দলীয় সঙ্গীত, দ্বৈতসঙ্গীত ও পাপেট শো পরিবেশিত হয়। মেলায় ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ-গাঁদা নানা রকমের দেশি ফুলের পাশাপাশি বিদেশি ফুলের বাহারও রয়েছে। এবার প্রায় ১২ লাখ ফুলপ্রেমীদের সমাগম আশা করছেন আয়োজকরা। মেলার বিভিন্ন দিনে মাল্টি কালচারাল ফেস্টিভ্যাল, বই মেলা, পুতুল নাচ, গ্রামীণ মেলা, লেজার লাইট শো, ভায়োলিন শো, মুভি শো এবং পিঠাপুলি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পযর্šÍ পার্ক দর্শণার্থীদের জন্য খোলা থাকবে এবং টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা। মেলায় দর্শণার্থীদের জন্য টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ