মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

তরুণদেরই নিতে হবে জ্বালানি চাহিদা পূরণের নিশ্চিত চ্যালেঞ্জ

আল জোবায়ের, স্টাফ রিপোর্টার: জ্বালানি বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস না করে জ্বালানি চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ তরুণদেরই নিতে হবে।

গত শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অডিটোরিয়ামে একটি ইন্টারঅ্যাকটিভ সেশন ‘জ্বালানি সম্প্রসারণ: বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ ও ন্যায়সঙ্গত রূপান্তরের সঙ্গে সংঘাত’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এ কথা বলেন।

ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ব্রাইটার্স, ক্লাইমেট ফ্রন্টিয়ার, গ্লোবাল ল’ থিংকার্স সোসাইটি, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, ওএবি ফাউন্ডেশন, সচেতন ফাউন্ডেশন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, যুব পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা এবং ইয়ং ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ফসিল ফুয়েল নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটির কৌশলগত উপদেষ্টা হারজিত সিং, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর সদস্য সচিব শরীফ জামিল।
বক্তারা বাংলাদেশের জ্বালানি সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দ্বন্দ্ব এবং ন্যায়সঙ্গত রূপান্তর সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

আলোচনায় অংশ নেন তরুণ জলবায়ু নেতা ও কর্মী, শিক্ষার্থী ও গবেষক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, সিভিল সোসাইটি সংগঠন এবং নীতিনির্ধারকরা।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ফারিয়া অমি এবং সূচনা বক্তব্য দেন সাইদুর রহমান সিয়াম।

সূচনা বক্তব্যে সাইদুর রহমান সিয়াম বলেন, ‘প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস না করে জ্বালানি চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ তরুণদেরই নিতে হবে।’

খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম তার বক্তব্যে বলেন, ‘জ্বালানি সম্পদ এবং জ্বালানি উপকরণ এই দুই বিষয়ের সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকতে হবে। জ্বালানি নিয়ে চিন্তা করতে হলে সাপ্লাই চেইনকে বিবেচনায় আনতে হবে। সাপ্লাই চেইনের আওতায় জ্বালানি সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহন ব্যবস্থা, জ্বালানির ব্যবহার, রূপান্তরকরণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে। একেক ধরনের জ্বালানির একেক রূপ আছে। কোন জ্বালানি কোন রূপে আছে তা বুঝতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি সম্পদ থেকে জ্বালানি চাহিদায় রূপান্তরের জন্য ভৌত অবকাঠামো, মানবসম্পদ, কারিগরি প্রযুক্তি ও নীতি থাকা দরকার। তা না হলে জ্বালানি চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। জ্বালানি অন্যান্য সম্পদের মতো সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। সব জ্বালানি সব ক্ষেত্রে সমানভাবে ব্যবহার করা যায় না। গ্যাস থাকার কারণে আমাদের দেশ গ্যাস জ্বালানি নির্ভর। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বিক্রেতা অল্প কয়েকটি দেশ, তাই সঠিকভাবে মূল্য নির্ধারণ হয় না। আমরা জ্বালানির জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের গ্যাসের মজুদ দিনদিন কমে যাচ্ছে। আমরা আমদানি করা গ্যাস দিয়ে চাহিদা মেটাতে চাচ্ছি। এজন্য সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এজন্য আমাদের সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে।’

শরীফ জামিল বলেন, ‘বাংলাদেশে জ্বালানি সম্প্রসারণ শুরু হয় ২০০০ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সৃষ্টির মাধ্যমে। বিদ্যুতের কথা চিন্তা করে তখন পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়। এজন্য আইনি কাঠামো তৈরি হয়। সে কারণে আমাদের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হয়।’

হারজিত সিং বলেন, ‘আমেরিকা পৃথিবীতে বড় পরিবেশ দূষণকারী দেশ। এখন প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সম্পদের ওপর কার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানির কৌশলগত প্রযুক্তি সম্পদের অধিকারী অন্যতম দেশ চীন। তাই এ বিষয়ে অগ্রগতি অনেক দূরূহ। উত্তর-দক্ষিণ সম্পর্কের দূরত্ব বাড়ছে। যার ফলে দরিদ্র দেশগুলোতে জ্বালানি ব্যয় বেড়েই চলেছে এবং জনগণ এই ব্যয় বহন করতে পারছে না। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ প্রাকৃতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। তাই বাংলাদেশকে এ বিষয়ে বৈশ্বিক পরিসরে আরও কথা বলতে হবে। জনগণকেও আরও সচেতন হতে হবে।’

আলোচনার পর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে একটি কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নিবন্ধিত ৩৮৫ জন তরুণ অংশ নেন। প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করা হয়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ