মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

তালায় পানিবন্দি ৫ হাজার মানুষ বিশুদ্ধ পানির সংকট জনজীবন 

বি এম বাবলুর রহমান, তালা: তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে উজান পানির প্রবাহে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে শিরাশুনি গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট, বেড়েছে পানিবাহিত রোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শত শত পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেশবপুর এলাকার উজান পানি প্রবাহিত হয়ে তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শিরাশুনি গ্রামে প্রবেশ করছে। গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি জলমগ্ন। রাস্তাঘাট, কৃষি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই পানির নিচে। এতে নারী-পুরুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
শিরাশুনি গ্রামের গুলশানা আরা খাতুন বলেন, অতিবৃষ্টির সঙ্গে উজান পানি মিলিয়ে হঠাৎ করেই আমাদের গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে। রান্নাবান্না, কৃষিকাজ, শিশুদের পড়াশোনা—সব কিছুতেই ভোগান্তি। একই গ্রামের মজিবার রহমান শেখ বলেন, গত তিন বছর ধরে এই পানি আমাদের স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। সাংবাদিক, এনজিওরা আসেন, কথা বলেন, কিন্তু সমাধান কিছুই হয় না। কৃষিকাজ বন্ধ, কাজ নেই, ঘর থেকেও বের হতে পারি না। স্থানীয় নারী ময়না বেগম বলেন, আমাদের বাড়িতে কোমর সমান পানি। কেউ মারা গেলে কবরস্থানে নেওয়াও সম্ভব হবে না। বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকেই চুলকানি ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় জেএসডির নেতা মীর জিল্লুর রহমান জানান, গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনের পরিকল্পনা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কেশবপুরের নরনিয়া খাল দিয়ে পানি না ছাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইতোমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানির গতি বাড়াতে বিভিন্ন খালের মুখে থাকা নেটপাটা ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। তবে কেশবপুরের উজান পানি না সরালে আশপাশের আরও ১০টি গ্রাম স্থায়ী জলাবদ্ধতায় পড়বে। তিনি আরও বলেন, নোয়াপাড়া খাল দিয়ে কিছুটা পানি সরানো গেলেও নরনিয়া খাল ও ভদ্রা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কেশবপুর ও মনিরামপুরের পানি ভদ্রায় না পড়ে আমাদের এলাকায় পড়ে জলাবদ্ধতার কারণ হচ্ছে। ভদ্রা নদী খনন করলেই স্থায়ী সমাধান সম্ভব।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপা রাণী সরকার বলেন, উপজেলার অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। ইতোমধ্যে কয়েকটি খালের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। আমি নিজেও একাধিকবার এলাকা পরিদর্শন করেছি। দ্রুত পানি অপসারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ