রানা সরদার, নওগাঁ: যায়যায়দিন পত্রিকায় গত ২৫ জানুয়ারি ১৫৩ টি অবৈধ ইট ভাটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে যায়যায়দিন পত্রিকার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি রুহুল আমিনকে মৃত্যুর পর তার লাশ গুমের হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭ টার দিকে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
ভুক্তভোগী ও জিডি সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি নওগাঁ জেলায় ১৫৩ টি অবৈধ ইট ভাটা নিয়ে জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকা ও মাল্টিমিডিয়াই নিউজ প্রকাশিত হবার পর থেকেই এমনটা হুমকি আসতেছে।
পেশাগত দায়িত্ব অনুযায়ী সংবাদটি প্রকাশের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য নিয়ে অফিসে সংবাদটি পাঠিয়েছে তিনি। গত ২৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০ টার দিকে যায়যায়দিন ই-পেপার এ সংবাদটি প্রকাশিত হলে Ruhul Amin নামে একটি ফেইসবুকে নিউজটি শেয়ার করলে মূহুর্তের মধ্যে দেখা যায় বিভিন্ন ফেইসবুক আইডি থেকে লাইক,কমেন্টে মতামত ও শেয়ার হয়। এরপর গত ২৪ জানুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে সাংবাদিক রুহুল আমিনের ০১৭১৯-৭১১৪৫৩ এই নম্বরে অপরিচিত এক নম্বর থেকে তার whatsapp এ নিউজটি কেনো করা হয়। আর বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণে মেরে ফেলা এবং লাশ গুমের হুমকি দিয়ে ফোনটি কেটে দেয়া হয়। নিউজটি প্রকাশের পর সারা জেলায় দেখা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাগাতার ৪ দিন যাবৎ মাইকিং হচ্ছে। মাইকে বলা হচ্ছে কৃষকের ফসলি জমির মাটি যদি কেউ ইট ভাটায় বিক্রি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে অন্য নাম্বর থেকে রুহুল আমিনকে যেখানে সেখানে ডাকা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক রুহুল আমিন আরো বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ হুমকির শিকার হয়েছি। এ হুমকি শুধু মত প্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাত নয়, বরং গনতন্ত্র এবং আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত। আমি আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। আমি আশা করি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনবে।
নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে সে বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিবাদ করার সুযোগ আছে। সে সুযোগ কাজে না লাগিয়ে গণমাধ্যমকর্মীকে বাক্তিগত ভাবে হুমকি-ধামকী দেওয়া একটি অপরাধ। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বুধবার বিকেলে বলেন, সাংবাদিকের জিডির বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।