
মো. রাশেদুল ইসলাম, মিঠাপুকুর(রংপুর): রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বলদিপুকুর পল্লী বিদ্যুৎ সংলগ্ন মোক্তারুল ইসলাম ভোদল (২৬) নামে এক যুবকের জবাই করা ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ।
হত্যাকারীরা ভোদলের একটি ব্যবহৃত পালসার মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে। এটি ছিনতাইয়ের জন্য হত্যা না অন্য কোন কারণ আছে তা নিয়ে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সোমবার রাত আনুমানিক ১১টা দিকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বলদিপুকুর পল্লী বিদ্যুৎ সংলগ্ন অভিরাম নুরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভোদল নিখোঁজ রয়েছে এমন একটি জিডি করে বাড়ি ফেরার পথে টর্চ লাইটের আলোতে ভোদলের জবাই করা মরদেহ দেখতে পান পরিবারের লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ৩ নং পায়রাবন্দ ইউনিয়নের অভিরামপুর নুরপুর গ্রামের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলামের পুত্র মোক্তারুল ইসলাম ভোদল। নিখোঁজের পূর্বে সোমবার সন্ধ্যায় বলদিপুকুর বাসস্ট্যান্ডে তার সহপাঠীদের জায়গীর বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার কথা বলে তার ব্যবহৃত পালসার মোটরসাইকেলটি নিয়ে চলে যায়। পরে তার পরিবারের লোকজন একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। শেষে তার ব্যবহৃত নম্বর খোলা থাকার পরেও ফোন রিসিভ না করায় মিঠাপুকুর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন।
নিখোঁজ জিডি করে বাড়ি ফেরার পথে জনৈক এক ব্যক্তি জানান, ভোদল রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার সময় জায়গীর বাসস্ট্যান্ড থেকে বলদিপুকুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে রওয়ানা দিয়েছিলেন। পরিবারের লোকজনসহ স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে দুর্ঘটনার আশংকায় বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার দু’পাশে টর্চ লাইটের আলো দিয়ে খোঁজ চালাচ্ছিলেন।
একসময় বলদিপুকুর পল্লী বিদ্যুৎ সংলগ্ন তারা আসলে টর্চ লাইটের আলোতে দেখা যায়, ভোদল রাস্তার পাশে পড়ে আছে এবং ভোদলকে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি হত্যাকারীরা ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছে। তার দুটি মুঠোফোন তার লাশের পাশেই সচল ছিল।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির দাবি, ভোদল এলাকার একজন চিহ্নিত সুদ কারবারি। তার সুদের ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হয়েছে বহু মানুষ। অনেকের দাবি, সুদের টাকা নিয়ে কোনো ঝামেলা থেকে হয়তো বা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি অনেকের ধারণা, তাকে অন্য কোথাও হত্যা করে মরদেহ এখানে ফেলে মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়েছে হত্যাকারীরা।
মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ যায়যায়কালকে জানান, মধ্যরাতে মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য মিঠাপুকুর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং হত্যার কারণ সম্পর্কে অনুসন্ধান চলছে। এদিকে মিঠাপুকুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় একের পর এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ।