
মেহেদী হাসান, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি: আজ ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনা ট্র্যাজেডি দিবস। ২০০৫ সালের এই দিনে জঙ্গীদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৮টি তাজা প্রাণ থেমে গিয়েছিল। আহত হয়েছিল অর্ধশতাধিক মানুষ। স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল পুরো নেত্রকোনা।
সেদিন আহত ও নিহতদের স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে নেত্রকোনার আকাশ বাতাস। সেদিন শহরের অজহর রোডে উদীচীর একনিষ্ঠ কর্মী খাজা হায়দার হোসেন, সুদীপ্তা পাল শেলী, মোটর মেকানিক যাদব দাস, গৃহবধু রানী আক্তার, ভিক্ষুক জয়নাল, রিক্সাচালক আফতাব উদ্দিন, রইছমিয়া ও অজ্ঞাতনামাসহ মোট ৮ জন নিহত হন।
নিহতদের স্মরণে দিনটি পালনে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীসহ স্থানীয় অন্যান্য সংগঠনগুলো।
নেত্রকোনা ট্র্যাজিডি দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে-সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে উদীচী কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলণ ও কালো ব্যাজ ধারণ, সাড়ে ৯টায় শহরের অজহর রোড এলাকায় নিহতদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ১০টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত যানবাহনসহ শহরে যে যেখানে থাকবে সেখানে দাঁড়িয়ে ৩ মিনিট নিরবতা পালন, ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে প্রতিবাদী মিছিল, দুপুর ১২টায় শহীদদের কবর জিয়ারত ও শ্মশানে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিকাল সাড়ে ৫টায় সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
বিগত ২০০৫ সালে ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনা মুক্ত দিবসের প্রস্তুতি চলাকালে অজহর রোডে জেলা উদীচী ও স্থানীয় শতদল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী কার্যালয়ের সামনে পরপর দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। প্রথম বোমাটি বিস্ফোরণ হলেও তাতে কেউ হতাহত হয়নি। পরে সেই বোমাটি দেখতে সবাই প্রস্তুতি সভা এবং রিহার্সেল থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন। পরবর্তীতে বোমাটি দেখতে দেখতে চোখের পলকেই এক সাইকেল আরোহী সকলের ভীরের মধ্যে দ্রুতবেগে ঢুকে পড়েন। তখন আত্মঘাতী বোমা হামলায় সঙ্গে সঙ্গে ৮টি তাজা প্রাণ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। আহত হয়ে পড়েন আরও অর্ধ শতাধিক মানুষ।
জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর নানা আয়োজনে ট্র্যাজিডি দিবস পালন করা হচ্ছে। স্তব্ধ থাকবে ৩ মিনিট নেত্রকোনা। কর্মসূচী সফল করতে আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।