মঙ্গলবার, ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে মাটি উত্তোলন, হুমকিতে মহাসড়ক

মো. মনজুরুল ইসলাম : মাঠ ভরাট করার অজুহাতে কিছু মাটি মাঠে ফেলার পর বাকি মাটি যাচ্ছে ইটভাটা, নিচু বাড়ি ও ছোট জলাশয় ভরাটের জন্য। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া বৃন্দাবন চন্দ্র রাধা গোবিন্দ (বিসিআরজি) উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরে ড্রেজার বসিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে মাটি। এতে হুমকিতে রয়েছে দেলদুয়ার-কালামপুর আঞ্চলিক মহাসড়কসহ স্কুল ও খেলার মাঠ। এছাড়া স্কুলের মাঠ ভরাটের নাম করে ভ্যেকু দিয়ে ওই পুকুরের মাটি বিনা টেন্ডারে ইট ভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর পক্ষে কফিল উদ্দিন, মো. কাদের খান ও মো. শামীম খান জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাকুটিয়া বৃন্দাবন চন্দ্র রাধা গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রায় ৩ একর আয়তন বিশিষ্ট একটি বিশাল পুকুর রয়েছে। পুকুরটি সংস্কারের নামে প্রাথমিক অবস্থায় খননের কাজ শুরু করে। প্রথমে পুকুর সংলগ্ন মাঠ ভরাট করার অজুহাতে সামান্য কিছু মাটি মাঠে ফেলার পর বাকী মাটি যাচ্ছে ইট ভাটা, নিচু বাড়ি ও ছোট জলাশয় ভরাটের জন্য।

আরও জানা যায়, ড্রেজার ও ভ্যেকু বসিয়ে দেদারছে মাটি বিক্রি করে নাম মাত্র টাকা বিদ্যালয় তহবিলে যাচ্ছে। পুকুরে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে মাটি উত্তোলনের মহোৎসবে মেতেছে তারা। পুকুরের পূর্ব ও দক্ষিণ পাশে চলমান রয়েছে আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ।

স্থানীয়দের আশংকা, ড্রেজার দিয়ে পুকুর থেকে মাটি উত্তোলনের কারণে যে কোন সময় ধসে যেতে পারে পুকুরের দুই পাশের মহা সড়ক।

স্থানীয় ওবায়দুর রহমান বলেন, স্কুলের মাঠ ভরাটের অজুহাতে একটি মহল পুকুরের মাটি বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মাটি খেকোরা প্রভাবশালি হওয়ায় কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করছে না। এছাড়া বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে স্কুল ক্যাম্পাস, খেলার মাঠ, মহা সড়ক ও পূর্ব পাশে অসংখ্য বসত বাড়ি ভয়াবহ ভাঙ্গণের স্বীকার হওয়ার আশংকা রয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

পুকুর খনন ও মাঠ ভরাটের জন্য স্কুল ফান্ড থেকে টাকা উত্তোলন প্রসঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. আরিফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি জানেন।

প্রধান শিক্ষক মো. শামীম হুদা বলেন, স্কুলের প্রয়োজনে ড্রেজার বসিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। মাটি বিক্রির টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হচ্ছে। অবশিষ্ট টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হচ্ছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক বলেন, পুকুর খনন ও মাঠ ভরাটের জন্য পুকুর থেকে প্রথমে ৯০ হাজার মাটি উত্তোলনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু মাটির দাম কম হওয়ায় স্কুলের পক্ষ থেকে ড্রেজার ও ভ্যেকু বসানো হয়। ড্রেজার ও ভ্যেকুসহ আনুষঙ্গিক খরচের জন্য ৭০ হাজার মাটি বাহিরে বিক্রি করা হয়েছে। বাকী ২০ হাজার মাটি দিয়ে পুকুরের পাড় ও মাঠ ভরাট করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন কোন ভাবেই করতে পারবে না।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ