
ফরিদপুর প্রতিনিধি: রয়েছে আলিশান বাড়ি, নামে-বেনামে কৃষি জমি, দুই একর জায়গায় জুড়ে পুকুর, শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিভিন্ন শপিংমলে দোকান।
কোনো অভিজাত পরিবারের সন্তান না হয়েও ইতিমধ্যে তার অর্থ-বিভব দেখলে চোখ কপালে উঠার মতো অবস্থা। এ যেন ‘আলাউদ্দিনের চেরাগ’ হাতে পেয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়া।
বলছি ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানের মিজানের কথা। তিনি ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়ন দয়ারামপুর গ্রামের বাসিন্দা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সাধারণ পরিবারের জন্ম এই মিজানের। ফরিদপুর মোল্লা বাড়ি সড়কে তার রয়েছে তিনতলা জায়গাসহ বাড়ি। শহরতলী দয়রামপুর গ্রামে দুই একর জুড়ে পুকুরসহ বাগান। পাশে রয়েছে কৃষি জমি।
রাজবাড়ি রাস্তার মোড়ে দোকান। প্রধান শহরের মধ্যে জনতা ব্যাংকের মোড়ে ১১তলার দ্বিতীয় তলায় ২টি দোকান, নিউ মার্কেট আয়শা সুপার মার্কেটে ২টি দোকান।
একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর জন্য সরকারি বেতন-ভাতা বাবদ যে পরিমাণ বরাদ্দ রয়েছে তা দিয়ে জীবন-যাপন করতে হিমশিম খেতে হয়। সেখানে মিজানুর রহমান একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কীভাবে এত সম্পদ গড়ে তুলেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন সাধারণ জনগণের। তিনি এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক। এই অর্থ সম্পত্তি গড়ে তোলার পিছনে আয়ের উৎস কি জানতে চায় সচেতন মহল।
অভিযোগ আছে, সদর উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কাজ এই মিজানের মাধ্যমে করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদে সকল বরাদ্দ থেকে শুরু করে হাট-বাজারের ইজারা, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, চেক পাস তাকে ছাড়া হয় না। পরিষদে তার অফিস কক্ষ দেখলে মনে হবে এই বুঝি পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা। অথচ তার পদবী অফিস সহকারী। প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তা না হলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উপজেলা চেয়ারম্যানদের তিনি যা বলবেন সেটাই ঠিক।
এই বিষয়ে মো. মিজানুর রহমান মিজানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি যায়যায়কাল প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমাদের সম্পদ বাপ-দাদার আমল থেকেই। আমার ছেলে একজন বড় উদ্যোক্তা। আমার বর্তমান অবস্থা দেখে মানুষ হিংসার বশবর্তী হয়ে আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে।’
তাছাড়া তিনি যায়যায়কাল প্রতিবেদককে ফরিদপুরে বসে আলাপ করার দাওয়াত দেন। এবং তিনি ফরিদুপর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলারও অনুরোধ জানান।
গোপন সূত্রে জানা যায়, এই মিজানের দুর্নীতি, অনিয়ম নিয়ে যতবার সাংবাদিকরা সংবাদ করতে গেছেন তাদেরকে কোনো না কোনোভাবে তিনি ম্যানেজ করে ফেলেন। এবং অন্য কোনো সাংবাদিক সংবাদ করতে গেলে তার পরিচিত বা সুবিধাভোগী সাংবাদিকদের দিয়ে ম্যানেজ করেন বা হুমকি-ধমকি দেন। তার অফিসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায় না।
অনেক আগেই তাকে সদর উপজেলা পরিষদ থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বদলি করা হয়। তবে কোন ক্ষমতাবলে তিনি এখনো উপজেলা পরিষদে বহাল রয়েছেন সেটা জানা যায়নি।